ঋষাভ পান্তের আউটে মুম্বাই টেস্টে বিতর্ক হয়েছিল। সেদিন ঋষাভ টিকে গেলে হয়ত ম্যাচের ফলাফল হতে পারত ভিন্নরকম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের স্বপ্ন অনেকটাই ফিঁকে হয়ে যায় ভারতের। হটস্পটের আলোচনা শুরু এখান থেকেই।
কারণ, ভারতে খেলা হলেই অনুপস্থিত থাকে হটস্পট। ভারতীয় বোর্ড অবশ্য চেষ্টার কমতি রাখেনি। কিন্তু, অনুমতি মেলেনি। কারণ, হটস্পট মূলত সামরিক উদ্দেশ্যে তৈরি করেছিলেন ফরাসি বিজ্ঞানী নিকোলাস বায়ন। অন্ধকারে বা ধোঁয়াচ্ছন্ন পরিবেশে ট্যাঙ্ক বা যুদ্ধজাহাজ সনাক্ত করতে এটা ব্যবহার করা হয়।
২০০৬-০৭ মৌসুমের অ্যাশেজে এই প্রযুক্তি ক্রিকেটে আনে চ্যানেল নাইন। এর আগেও অনেক নতুন প্রযুক্তি ক্রিকেটে আমদানি করে এই সংবাদ মাধ্যম। ইনফ্রারেড ক্যামেরার মাধ্যমে আসলে এটা দিয়ে বোঝা যায় বলাটা ব্যাটে বা শরীরের কোথাও আদৌ স্পর্শ করেছে কি না। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, আরব আমিরাতে ব্যবহার হয়েছে এই প্রযুক্তি।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড বা তাদের ব্রডকাস্টাররা কেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন না! এই প্রযুক্তি ব্যয়বহুল, সন্দেহ নেই। প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ডলার খরচ করতে হয় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে। তবে, এখানে সামরিক কারণটাই মূখ্য। কিংবদন্তি লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলেও সেটাই বলেছেন।
তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্রডকাস্টার মনে করেন, সামরিক অনুমতিটা মূখ্য নয়। মূলত, ব্যয়ের কথা মাথায় রেখেই এই পথে কখনও হাঁটেনি বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। আর সেজন্যই ঋষাভ পান্তের আউটের মত অনাকাঙ্খিত সব ঘটনা ঘটে। স্নিকোমিটার দিয়ে সব সময় বল কোথায় লেগেছে সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
ফলে, কোনো সন্দেহ ছাড়াই বলা যায়, হটস্পট ক্রিকেটকে আরও নিখুঁত করে তুলতে পারে। অন্যদিকে এটি ক্রিকেটের মানবিক মাত্রাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে। কারণ ক্রিকেট শুধু একটা খেলা নয়, এটি একটি সংস্কৃতি। আর এই সংস্কৃতির মধ্যে মানুষ, প্রযুক্তি আর নিয়মের মধ্যে একটা সুন্দর ভারসাম্য না রাখলে খেলার বিনোদন কৃত্রিম হতে যাওয়ায় হারিয়েই যাবে হয়ত।
স্কাই স্পোর্টস, সুপার স্পোর্টসের মত জগতবিখ্যাত চ্যানেল ও এই প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। সবচেয়ে অবাক করার মত ব্যাপার হল, আন্তজার্তিক ক্রিকেটেও এর ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে। আর মানবিক কিছু ভুল আর আক্ষেপ না থাকলে ক্রিকেটও তাঁর সৌন্দর্য্য হারাবে।