প্রথম ম্যাচে ৭১ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ৫৫ আর তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৬ – যুব এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে এমন অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক ব্যাটার, তিনি আশিকুর রহমান শিবলী। ফাইনালের মত মঞ্চেও তাই তাঁর ব্যাট হাসবে এমনটাই ছিল প্রত্যাশা; হয়েছেও তাই, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১২৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেছেন শিবলী।
ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই অমিদ রহমানকে চার মেরে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই ওপেনার। এরপর ওপেনিংয়ের সঙ্গে জিসান আলমকে হারালেও প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন তিনি। ভাল বলকে দেখেশুনে খেলেছেন আর বাজে বলগুলো পাঠিয়েছেন বাউন্ডারির ওপারে, এভাবেই চলতি টুর্নামেন্টে চতুর্থবারের মত পঞ্চাশ রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান তিনি।
তবে এতটুকুতেই না থেমে বড় রানের দিকে ছুটতে থাকেন এই তরুণ। তাঁর দৃঢ়তার পুরষ্কার দিতে ভুল করেননি ক্রিকেট বিধাতা, ৪২তম ওভারে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে উদযাপনে মাতেন তিনি। এরপরও ক্রিজে থেকেছেন, একেবারে শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১৪৯ বলে ১২৯ রান; সেই সাথে দলকে এনে দিয়েছেন ২৮২ রানের বিশাল সংগ্রহ।
অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে আগে কখনো সেঞ্চুরি করেননি এই উইকেটকিপার। অথচ গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই দুইবার পেলেন শতকের দেখা। তাই তো এতদিনের অচেনা ছেলেটা এখন পুরো দেশের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু, নতুন সম্ভাবনার দিশারী।
এনামুল হক বিজয়, লিটন দাসের মত উইকেটকিপার ওপেনার বাংলাদেশ পেয়েছে যুব দল থেকেই। সেই পথেই এবার হাঁটছেন আশিকুর রহমান শিবলী; যদিও সেজন্য আরো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে তাঁকে, শাণিত করতে হবে নিজেকে। যেই প্রতিভা নিয়ে তিনি এসেছেন ক্রিকেটাঙ্গনে, নিশ্চিতভাবেই শুধু ‘জাতীয়’ পর্যায়ে আটকে থাকলে চলবে না; তাঁকে হতে হবে আগামীর বিশ্বসেরা।
এবারের যুব এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বাদে সবার বিপক্ষেই রান পেয়েছেন শিবলী। সেমিফাইনালে রান আউট না হলে হয়তো সেদিনও জয়ের নায়ক হতে পারতেন; সেই হিসেব বাদ দিলে টাইগারদের বাকি সব জয়েই অবদান রয়েছে তাঁর।
ফাইনালেও কি তাহলে এই উদীয়মান তারকার ব্যাটে চড়ে জয় পাবে টিম বাংলাদেশ, প্রথমবারের মত মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জিত হবে তাঁর অবদানে – উত্তরের অধীর অপেক্ষায় আছে সতেরো কোটি ক্রিকেটপ্রেমী।