হট সিটে বসবেন কে!

ব্যাট হাতে দারুণ এক বছর, একটা সময় কাটালেন। তবে অধিনায়কের দায়িত্বটা রীতিমত বোঝা হয়ে রইলো জো রুটের জন্যে। ২০২১ সালে যেখানে জো রুট হয়েছেন বর্ষসেরা রান সংগ্রাহক টেস্ট ক্রিকেটে। আবার ঠিক একই মানুষের নেতৃত্বে এক পঞ্জিকাবর্ষে নয় টেস্ট হারার লজ্জাজনক এক রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে ইংল্যান্ড। মুদ্রার দুই পিঠে সমান্তরাল জো রুট।

অধিনায়ক হিসেবে এমন চরম ব্যর্থতা মেনে নেওয়াটা অনেক দুষ্কর। আর সমর্থক থেকে শুরু করে দেশের মানুষদের প্রত্যাশার এমন অপমৃত্যু যেন সইতে পারছিলেন না জো রুট। তাই তিনি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন নিজের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে। এখন প্রশ্ন নিশ্চয়ই সবার মনেই উদিত হয়েছে। নতুন অধিনায়ক তবে কে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ কিছু নাম সামনে আসা স্বাভাবিক। সম্ভাবনা নিয়েই হবে আলোচনা।

  • বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)

জো রুটের স্থালাভিষিক্ত হতে পারেন যারা তাঁদের তালিকায় সবার উপরেই নাম থাকছেন বেন স্টোকসের নাম। কেননা তিনিই তো ছিলেন সহকারী অধিনায়ক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দলকে কি করে নেতৃত্ব দিতে হয় সে দীক্ষাটা রয়েছে তাঁর। তাছাড়া ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সমর্থকদের একটা বড় অংশের পছন্দের খেলোয়াড় বেন স্টোকস। তাছাড়া স্টোকসের ডেডিকেশন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগও তো নেই।

তবে এত সব ভাল দিকের পেছনে আরও একটি দিক নিশ্চয়ই মাথায় রাখবে ইংল্যান্ডে ক্রিকেট বোর্ড যে স্টোকস বেশ ইনজুরি প্রবণ একজন খেলোয়াড়। তাঁকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়াটা ঠিক কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে একটা প্রশ্নও থেকে যায়। তাছাড়া ২০২১ এ একটা লম্বা সময়ের জন্যে ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন স্টোকস, মানসিক অবসাদজনিত কারণে। এমন দীর্ঘ মেয়াদের ছুটি নিশ্চয়ই একজন অধিনায়ককে দিতে পারবে না ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড।

তাছাড়া বেশ পুরনো এক প্রবাদ রয়েছে যে ইংলিশ অলরাউন্ডাররা খুব একটা ভাল অধিনায়ক হন না। উদাহরণ হিসেবে ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যত্ম সেরা অলরাউন্ডার ইয়ান বোথামের নামের সাথে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। সুতরাং ক্রিকেট বোর্ডের দুশ্চিন্তার এক কারণ টেস্টের অধিনায়ক।

  • স্টুয়ার্ড ব্রড

ইসিবির এই দুশ্চিন্তা ঘোচাতে পারে স্টুয়ার্ড ব্রড। বেশ অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার হওয়ার পাশপাশি তিনি লম্বা সময় ধরে রয়েছে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র হিসেবে। তাছাড়া অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ব্রড। তবে খুব একটা সুখকর স্মৃতি নেই তাঁর অধিনায়ক হিসেবে। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁরদল নেদারল্যান্ডের কাছে রীতিমত অপদস্ত হয়েছিল।

তবে ক্রিকেট সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান রয়েছে তাঁর। কিন্তু তাতেও যে একেবারেই প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন না ব্রড তা বলার উপায় নেই। হয়ত স্বল্প মেয়াদে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য এনে দিতে পারবেন। তবে দীর্ঘমেয়াদে তাঁকে নিয়ে পরিকল্পনার ফলাফল ঠিক কেমন পাওয়া যাবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

  • স্যাম বিলিংস 

ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট দল কেন্টের অধিনায়কের দায়িত্বভার ইতোমধ্যেই বহন করছেন স্যাম বিলিংস। স্যাম বিলিংস হতে পারেন উপযুক্ত পছন্দ। যেহেতু তাঁর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতার রয়েছে। তাছাড়া ইংল্যান্ড দলে উইকেট রক্ষকের পজিশনটা খুব একটা পোক্ত নয়।

সুতরাং, সে দিক বিবেচনায় তিনি জাতীয় দলের দায়িত্বটা পেতেই পারেন। তবে বাঁধ সাধতে পারে তাঁর নেওয়া সিদ্ধান্ত। কাউন্টি ক্রিকেট না খেলে তিনি এখন খেলছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। টেস্ট ক্রিকেতে তাঁর কমিটমেন্টের ব্যাপার নিয়ে সন্দিহান হতেই পারে বোর্ড।

  • জেমস ভিন্স

অনেক গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে ডানহাতি ব্যাটার জেমস ভিন্স পেতে পারেন নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব। কেননা তিনি কাউন্টি দল হ্যাম্পশায়ারের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

অভিজ্ঞতা জেমসেরও রয়েছে। কিন্তু ১৩ টেস্ট খেলেও যিনি নিজের জায়গাটা ইংল্যান্ড জাতীয় দলে পোক্ত করে উঠতে পারেনি তাঁর উপর দলের অধিনায়কের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার খানিক বোকামির পরিচয় দেওয়া হয়ে যায়।

  • জ্যাক ক্রাউলি 

জ্যাক ক্রাউলিও নিজেকে যে একেবারে জাতীয় দলে থিতু করতে পেরেছেন তা কিন্তু নয়। তবুও তাঁর নাম শোনা যাচ্ছে ইংল্যান্ডের পরবর্তী অধিনায়কের তালিকায়।

তাঁর হাতেও অধিনায়কের দায়িত্ব তুলে দেওয়া নিয়ে উঠতে পারে নানান রকমের প্রশ্ন, হতে পারে সমালোচনা। তবে যেহেতু তিনি এখন দলে রয়েছেন, তাই তাঁকে সহকারী অধিনায়কের পদে নিযুক্ত করে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link