শেষ পাঁচ ম্যাচে তিনটা শতক। একটা শতককে আবার দিগুণ করেছেন পাথুম নিসাঙ্কা। এবারের সেঞ্চুরিতে তিনি ডোবালেন বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ম্যাচেই বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন। তার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণই করল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
টস ভাগ্য সাগরিকায় যে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা প্রমাণিত হল দ্বিতীয় ম্যাচে। প্রথম ম্যাচের ভুল শুধরে নিতে কোনরকম ভুল করেনি শ্রীলঙ্কা। যদিও তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটে ভর করে ২৮৭ রানের টার্গেট ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ। ফ্লাডলাইটের আলোতে বাংলাদেশি পেসারদের শুরুটাও হয়েছে দারুণ।
শরিফুল ইসলাম শুরুতেই তুলে নেন আভিষ্কা ফার্নান্দোকে। এরপর সপ্তম ওভারের শুরুতেই ৪৩ রানে তিন উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন এক যাত্রাপথের। যে পথে নিসাঙ্কার সঙ্গী হয়ে ওঠেন চারিথ আসালাঙ্কা।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আকাশ থেকে শিশির বর্ষণ নিত্যদিনের ঘটনা। সেই শিশিরেই দিশেহারা বাংলাদেশের বোলাররা। আর অন্যদিকে ব্যাটিং সহায়ক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে স্রেফ রান তোলার দিকেই ছিল লঙ্কান দুই ব্যাটারের পূর্ণ মনোযোগ।
সেদিক থেকে পাথুম নিসাঙ্কার তাগিদটা যেন ছিল একটু বেশি। নিজের ব্যক্তিগত পারফরমেন্স ছাপিয়ে দলকে একটা জয় এনে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টাই চালিয়েছেন তিনি। সে চেষ্টা চালাতে গিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেনে ডানহাতি এই লঙ্কান ব্যাটার।
নিজের ব্যক্তিওত ইনিংসের একশতম বলেই শতক তুলে নেন নিসাঙ্কা। তিনি যেন সেঞ্চুরিকে ডালভাতে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশ সিরিজের আগেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে দু’টো সেঞ্চুরি করেছিলেন। একটিতে অপরাজিত থেকেছেন ২১০ রানে। দলের জয় নিশ্চিত করেই ছেড়েছিলেন মাঠ।
তেমন একটি প্রয়াশই তিনি করতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। সিরিজে সমতায় ফিরতে দারুণ মড়িয়া লঙ্কানদের ভরসার প্রতীক হয়ে বাইশ গজ আগলে রাখছিলেন তিনি। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে, পরিবেশের পূর্ণ ফায়দা তুলেই রানের চাকা সচল রাখেন নিসাঙ্কা।
তবে একটা সময় তাকে থামতেই হয়। সাগরিকায় শিশির পড়লেও, আদ্রতার পরিমাণ কম নয়। সেই আদ্রতাতেই পেশিতেও টান খেতে শুরু করেন একটা পর্যায়ে। শরীরেও ক্লান্তি এসে ভর করতে শুরু করে। দীর্ঘক্ষণ যে ব্যাটিং করেছেন তিনি। সেই ওপেনিংয়ে নেমে ৩৭তম ওভার অবধি খেলে গেছেন তিনি।
সেই ক্লান্তি থেকেই হয় গড়মিল। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সুইপ শট খেলেন তিনি। খুব একটা পাওয়ার জেনারেট করতে পারেননি। তাতে করে বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লিটন কুমার দাস লুফে নেন ক্যাচ। সমাপ্তি ঘটে এক দারুণ ইনিংসের। দলের জয়ের ভীত গড়ে দিয়ে তবেই ঘটে তার প্রস্থান।
১১৩ বলে ১১৪ রানের এক ইনিংস খেলেও সন্তুষ্টি ছিলনা তার চোখেমুখে। হতাশা মিশ্রিত এক ক্লান্ত বদনে তিনি হেঁটে গেছেন প্যাভিলিয়নের দিকে। করতালিতে সবাই তাকে জানিয়ে অভিবাদন। এমন ধারাবাহিক একজন ব্যাটারের যে সেটাই প্রাপ্য।