হ য ব র ল ডিপিএল, নেই কোনো দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা!

লিস্ট এ ক্রিকেট বিবেচনায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মানদণ্ড হচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। কিন্তু পাড়ার ক্রিকেটের সাথে এ টুর্নামেন্টের পার্থক্য সম্ভবত শুধু স্বীকৃতিতে। চরম অব্যবস্থাপনা আগে থেকেই ছিল। তবে আইসিসি’র নীতিমালা অনুযায়ী যে এ টুর্নামেন্টে দুর্নীতি দমন বিভাগ রাখা প্রয়োজন সেটি যেন ভুলতেই বসেছে দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। 

মূলত, বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতেও অ্যান্টি-করাপশন ইউনিটের (এসিইউ) সদস্য নিয়োগ দেয় আইসিসি।  আইসিসির এই নীতিমালা অনুসরণ করে প্রতিটি পূর্ণ সদস্য দেশেই রয়েছে অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট বা দুর্নীতি দমন বিভাগ।

তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, বিসিবি’র এসিইউ ইউনিট প্রায় এক দশক আগে চালু হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে এই বিভাগের কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ে না। অনেকটা দায়সারা ভাবেই শেষ করা হয় ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) যদিও বা কিছুটা দৃশ্যমান হয়। কিন্তু লিস্ট এ ক্রিকেট তথা ডিপিএলে কোনো এসিইউ সদস্য রাখাই হয় না। 

এমতাবস্থায় ডিপিএলের ম্যাচগুলোও কোনো নিয়ম অনুসরণ করে চলে না৷ বহিরাগতদের ড্রেসিংরুমে প্রবেশের মতো ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া খেলোয়াড়, কোচিং বা সাপোর্ট স্টাফদের পরিচয়পত্র না থাকায় ইচ্ছামত মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন সবাই। 

সম্প্রতি মোহামেডানের মেহেদী হাসান মিরাজের মোবাইলে ভিডিও দেখে আম্পায়ারদের সমালোচনা করার পরই মূলত এসিইউ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

বিপিএলের প্রথম দুই আসরে যে ফিক্সিং কাণ্ড ধরা পড়েছিল তা এসিইউয়ের তদারকিতেই। আইসিসিও মূলত খেলোয়াড়দের নজরে রাখার জন্য এসিইউ ইউনিট চালু করেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদশেও তৈরি হয়েছিল এ ইউনিট। প্রথমবারের মতো এই ইউনিটে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর হুমায়ুন মোর্শেদ।

বর্তমানে বাংলাদেশে তিনজন সদস্য নিয়ে এসিইউ ইউনিট রয়েছে। তারপরও লিস্ট এ ক্রিকেটে তাদের দেখা মেলে না বললেই চললে। অবশ্য বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, দৃশ্যমান উপস্থিতি না থাকলেও তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।

এসিইউ সদস্য না থাকলে মূল সমস্যাটা যেখানে হয় তা হলো– ম্যাচ চলাকালে ড্রেসিংরুমের কাছাকাছি যেতে পারেন যে কেউ। সন্দেহভাজন কেউ থাকলেও তা ধরা পড়ে না৷ এর ফলে ক্রিকেটারদের সাথে যে কেউ ম্যাচ পাতানো কিংবা অনৈতিক কার্যকলাপের প্রস্তাবের সুযোগ দিতে পারেন। এমন অবাধ বিচরণের ফলে তাই টুর্নামেন্টেরই মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

এসিইউ কর্মকর্তা রাখা হলে মাঠের পরিবেশটা ঠিক থকে। ক্রিকেটার এবং ক্লাব কর্মকর্তার বাইরে দলের ড্রেসিংরুমে প্রবেশের বিধিনিষেধ নিশ্চিত হয়। এ ছাড়া খেলোয়াড়দের পরিচয়পত্র থাকলে বহিরাগতদের চিহ্নিতও করা যায়। কিন্তু এসিইউ সদস্য না থাকার কারণে এসব কোনো কিছুই দৃশ্যমান হয় না। 

তবে বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, ‘দুর্নীতি দমন বিভাগে আগের যে অফিসার ছিলেন, তিনি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কারণেই এমন হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তারা নতুন অফিসার নিয়োগ দেবেন। সব ঠিক থাকলে পরের টুর্নামেন্টগুলোতেই এসিইউ-এর পূর্ণ ইউনিট মাঠে থাকবে।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link