২৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে লজ্জার সাগরে ডুবল অস্ট্রেলিয়া। পরাজয়টা কেবল অস্ট্রেলিয়ার জন্য নয়, বরং পুরো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রস্তুতির জন্য এক বড় ধাক্কা। একের পর এক চোট আর আঘাতে বিধ্বস্ত স্টিভ স্মিথের দল। প্রথম ওয়ানডেতে ৪৯ রানের পরাজয়ের পর আজ তো যেন এক ভয়াবহ বিপর্যয়। ১৭৪ রানের বিশাল পরাজয়ে হোয়াইটওয়াশ হলো তারা।
শ্রীলঙ্কা যেন ইতিহাস রচনা করল, দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের পক্ষে নিয়ে স্মরণীয় এক জয় তুলে নিল। মজার ব্যাপার হল, এই শ্রীলঙ্কা দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকেটই পায়নি। আর অস্ট্রেলিয়া দল ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। শীর্ষ ক্রিকেটারদের হারিয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া – তা আর বলে না দিলেও চলে।
কলম্বোর মাটি এমনিতেই অস্ট্রেলিয়ার জন্য সবসময়ই কঠিন, কিন্তু আজকের ম্যাচটা যেন শিরোনামে বড় কালো দাগ হয়ে থাকবে। কুশল মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা ২৮১ রান সংগ্রহ করলেও অস্ট্রেলিয়া যেন সেই রান টানতে গিয়ে একেবারে সিঁড়ি মাড়াতে ভুলে গেল। ১০৭ রানে অলআউট—এটা কোনো সাধারণ পরাজয় নয়, বরং এক বড় অঘটন, যা অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে উপমহাদেশে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর।
এ যেন এক মহাকাব্যিক বিপর্যয়, যেখানে অস্ট্রেলিয়া ফাইট ব্যাক করার মত অবস্থাতেও যেতে পারেনি একদম। পাঁচজন তারকা খেলোয়াড় ছিটকে যাওয়ার পর দলে কোনো ছন্দ ছিল না। প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টোয়িনিস, মিশেল মার্শ—এই পাঁচ ক্রিকেটারের অনুপস্থিতি যেন এক বিপর্যয়ের আভাস দিয়েছিল আগেই।
মিশেল স্টার্কের শেষ মুহূর্তে ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়ানো আরও বড় একটা ধাক্কা, যার ফলশ্রুতিতে অস্ট্রেলিয়া একেবারে পঙ্গু হয়ে পড়ল। শেষ ম্যাচে ট্রাভিস হেডকে ফেরানো হল, তাও কক্ষপথে ফিরল না অস্ট্রেলিয়া।
শ্রীলঙ্কার এই জয় শুধু তারা নিজেদের জন্য উদযাপন করল না, বরং পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে জানিয়ে দিল, তারা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাইরে তাঁদের রাখা যে অন্যায় হয়েছে – সেটাও যেন বলতে চাইল। আর অস্ট্রেলিয়া? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পথ তাদের জন্য এখন আরও কঠিন। শক্তির সঞ্চয়ে, দলগঠনে, নির্ভরশীলতার জায়গায় অস্ট্রেলিয়া বুঝতে পারছে যে, যতটা সহজ ভেবেছিল, সেই পথটা এখন অন্ধকারে ঢাকা।