বিশ্বাস করুন, তাঁদের মাঝে কোনো বিদ্বেষ নেই

বিশ্বাস করুন, তাঁদের মাঝে কোনো বিদ্বেষ নেই। যা দ্বৈরথ আছে তা ওই মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ওই লড়াইটাও স্রেফ ক্রিকেটিয়, পুরোদস্তর পেশাদার। অফিস-আদালতে আমাদেরও যেমন কলিগদের মধ্যে যেমন একটা স্বাস্থ্যকর লড়াই একজন-আরেক জনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার – তেমনই।

তারাও আমার কিংবা আপনার মত শান্তিপ্রিয় মানুষ। ওদের জীবনটাও সবারই মত। সেই জীবনে উত্থান-পতন আছে। কষ্ট-আক্ষেপ আছে। বন্ধুত্ব আছে। তাই তো তো মাঠের লড়াই ভুলে সীমান্তের কাঁটাতার ছিঁড়ে ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহর সাথে শাহীন শাহ আফ্রিদির সম্পর্কটা শুধুই বন্ধুত্বের।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পিছিয়ে গেল বৃষ্টিতে। কলম্বো শুধু বৃষ্টি নয় বন্ধুত্ব ও ভাতৃত্বের ভালবাসায় সিক্ত হল। ক’দিন আগেই বাবা হয়েছেন ভারতীয় স্পিডস্টার জাসপ্রিত বুমরাহ। তাঁর স্ত্রী সাঞ্জানা গাণেশন পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বুমরাহ সেজন্য এশিয়া কাপের মাঝে দেশেও ফিরেছিলেন।

এশিয়া কাপে গিয়েই তিনি পেলেন বড় একটা সারপ্রাইজ। পেস বোলিংয়ে যিনি তাঁর প্রতিপক্ষ, সেই শাহীন শাহ আফ্রিদিই চমকে দিলেন বুমরাহকে। বন্ধু হয়ে হাতে তুলে দিলেন বিশেষ উপহার। ম্যাচ রিজার্ভ ডেতে যাওয়ার ঘোষণা আসার পর দু’দল তখন হোটেলে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখনই, বুমরাহ’র দিকে দৌড়ে আসেন আফ্রিদি, ভারতীয় পেসারের হাতে উপহার তুলে দেন।

বুমরাহও হাসিমুখে ধন্যবাদ ফিরিয়ে দেন। শুধু বুমরাহ কিংবা শাহীন আফ্রিদি নন, বন্ধুত্বের এই আর্দ্রতার বন্ধনটা ক’দিন আগে দেখা গেছে বিরাট কোহলি ও হারিস রউফের মাঝেও। অথচ, এই বিরাট কোহলিই ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারিস রউফের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শেল বিঁধেছিলেন পাকিস্তানের বুকে।

এমনকি হারিস রউফও বারবারই বলেন, তিনি সেই দিনের আক্ষেপটা একদিন ফিরিয়ে দিতে চান। নিতে চান বিরাট কোহলির উইকেট। তবে, সেই মুখোমুখি অবস্থানটা স্রেফ মাঠের জন্য বরাদ্দ। মাঠের বাইরে তাঁরা আর দশ জনের মত বন্ধুত্বের বন্ধনই গড়তে চান।

যেন, স্বাভাবিক, সুন্দর আর বাস্তব কোনো জীবনের গল্প। গল্পের আরও অধ্যায়ও আছে। বৃষ্টি ভেজা কলম্বোর সেই গল্পে মাঠকর্মীদের সাথে কাজে লেগে যান ফখর জামান।

কাভার দিয়ে মাঠ ঢাকতে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন মাঠকর্মীদের সাথে। ক্রিকেট তো ভদ্রলোকের খেলা। আর একালের ভদ্রলোকের মাঝে ভাতৃত্ববোধ থাকবে না তা কি করে হয়।

বিশ্বাস করুন, তাঁদের মধ্যে কোনো বিদ্বেষ নেই। তাঁরাও ভালবাসার হাত বাড়াতে জানেন। ভালবাসাতেই জীবন গড়ে, বিদ্বেষে নয়। খেলাধুলার মূলমন্ত্রটাও আসলে ভালবাসার জয়গানই গায়।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link