ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ বাংলাদেশকে আরেকবার এই ফরম্যাটটা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশ নতুন অধিনায়ক নিয়ে এসেছে। তবে তাতে তেমন কোন সুফল পাওয়া যায়নি। ব্যাটিং লাইন আপের গুরুত্বপূর্ণ দুই পজিশন থেকে কোন রান না এলে অধিনায়কই বা করবেন কী? ফলে ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তাতেই আছে বাংলাদেশ টেস্ট দল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং লাইন আপই ব্যর্থ হয়েছে। তামিম ইকবাল শুরুতে পেলেও তাঁর আউট হবার ধরণ নিয়ে প্রশ্ন আছে। সাকিব আল হাসানের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এছাড়া তিন নাম্বারে খেলা নাজমুল হোসেন শান্তও ব্যাট হাতে বরাবরের মত ব্যর্থ। ওদিকে চার নম্বরে মুমিনুল হক সৌরভকে বাদ দিয়ে খেলানো হয় এনামুল হক বিজয়কে। তবে তিনিও লাল বলের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে পারেননি।
পরবর্তী সিরিজে মুশফিকুর রহিম আসলে হয়তো সংকট কিছুটা কমবে। তবে তিন ও চার নম্বর পজিশনের এই সমস্যার কোন সমাধান এখনো খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। চার নম্বরে মুমিনুল হককে বাদ দিয়ে বিজয়কে নেয়া হলেও সেটা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
কেননা এনামুল হক বিজয় প্রচুর রান করেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে। তাঁর পুরষ্কার হিসেবেই তাঁকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ফলে তিনি দেশের সাদা বলের ক্রিকেটের জন্যই প্রস্তুত হচ্ছিলেন। অথচ হঠাত করেই তাঁকে নামিয়ে দেয়া হলো টেস্ট ক্রিকেটে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো দূরে থাক সাম্প্রতিক সময়ে বিজয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও ভালো সময় পার করছিলেন না। তাও পুরো ক্যারিয়ার ওপেন করে আসা বিজয়কে খেলানো হয়েছে চার নম্বরে। সবমিলিয়ে কোন ক্রিকেটীয় যুক্তিতে বিজয়কে টেস্টে ও চার নম্বরে খেলিয়ে দেয়া হলো তা অজানা। খুব স্বাভাবিকভাবেই লম্বা সময় পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি বিজয়। দুই ইনিংসেই হয়েছেন ব্যর্থ।
ওদিকে তিন নাম্বারে নাজমুল হোসেন শান্তও ম্যাচের পর ম্যাচ খেলেও ব্যর্থ হয়ে চলেছেন। ফলে ধারণা করা যায় পরবর্তী সিরিজে এই দুই পজিশনেই পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে প্রশ্নটা হচ্ছে তিন ও চার নাম্বার পজিশনের জন্য কোন বিকল্প কী আছে? এই সমস্যার সমাধান তাহলে কী?
মুশফিকুর রহিম ফিরলে অবশ্য একটি সমস্যার সমাধান হয়। তাঁকে হয়তো একধাপ প্রমোশন দিয়ে চারে খেলাবে বাংলাদেশ দল। এছাড়া লিটনকেও একটু উপরের দিকে খেলাতে চায় বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে পরবর্তী সিরিজেও হয়তো কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে টিকে যাবেন নুরুল হাসান সোহান। ফলে এই সিরিজের মত সামনেও লিটনের পাঁচে খেলার কথা।
এছাড়া সাকিব অনেকদিন ধরে সাতে খেললেও তাঁকে আরেকটু উপরে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে এসে হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোও সাকিবকে অন্তত ছয়ে খেলানোর কথা বলেছিলেন। এছাড়া সাত ও আটে যথাক্রমে নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ আছেন।
তবে ব্যাটিং লাইন আপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পজিশন তিন নাম্বারে খেলার মত কাউকে এখনো পাওয়া যাচ্ছেনা। ইনজুরির কারণে এই সিরিজটা খেলতে পারেননি ইয়াসির আলী রাব্বি। তিনি ফিরলেও তাঁকে ঠিক তিন নম্বরে খেলানো হবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনে খেলার মত কোন ক্রিকেটার আপাতত দেখা যাচ্ছেনা।
ওদিকে বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে থাকা মোহাম্মদ মিঠুনের দিকেও নজর রাখছে বাংলাদেশ দল। দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ যে ক্যাম্প করেছিল সেখানেও তাঁকে রাখা হয়েছিল। সেই ক্যাম্পে মিঠুনের ব্যাটিং মনে ধরেছিল জেমি সিডন্সের। ফলে তিন কিংবা চার নম্বরের এই পজিশনের জন্য তাঁকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারে বাংলাদেশ।