কনওয়ে-রাচিনের ব্যাটে লণ্ডভণ্ড ইংল্যান্ড

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ, মুখোমুখি গতবারের দুই ফাইনালিস্ট – অথচ ভারত জুড়ে নেই কোন উচ্ছ্বাস। গ্যালারিতেও ছিল না দর্শকের চাপ। উন্মাদনাহীন উদ্বোধনী ম্যাচটা অবশ্য ম্যাড়ম্যাড়েই ছিল। ইংল্যান্ডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৮২ বল আর নয় উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গিয়েছে তাঁরা। এমন ম্যাচ দেখে মনে হতেই পারে, ফাইনালে হারার জেদটাই দেখিয়েছে টম লাথামের দল।

টসে জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা ইংল্যান্ডের শুরুটা হয় দারুণ। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ট্রেন্ট বোল্টকে ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন জনি বেয়ারস্টো। ডেভিড মালানকে সঙ্গে নিয়ে কিউই পেসারদের নতুন বল ভালোভাবেই সামলান তিনি, তবে অষ্টম ওভারে মালানকে ফিরিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম উইকেট শিকার করেন ম্যাট হেনরি।

সেই শুরু, এরপর নিয়মিত বিরতিতে ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানতে থাকে নিউজিল্যান্ড। দলীয় ৬৪ রানের মাথায় বেয়ারস্টো আউট হওয়ার পর অল্পতে ফিরে যান ব্রুক, মঈনরাও। তবে একপাশে অবিচল ছিলেন জো রুট, অধিনায়ক বাটলারকে নিয়ে গড়েন ৭০ রানের জুটি। তবে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার প্যাভিলিয়নে ফিরলে বড় রানের স্বপ্ন ম্লান হয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

ততক্ষণে অবশ্য টুর্নামেন্টের প্রথম হাফসেঞ্চুরিয়ান হয়ে গিয়েছিলেন রুট, যদিও সেঞ্চুরি থেকে ২৩ রান দূরে থাকতেই কাটা পড়েন তিনি। লিভিংস্টোন, কারান, ওকস সবাই সেট হলেও বড় রান করতে পারেননি একজনও। ফলে ২৫২ রানে নয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল ইংল্যান্ড, তবে শেষ উইকেট জুটিতে মূল্যবান ৩০ রান যোগ হওয়ায় ২৮২ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় দলটি।

এই টার্গেট টপকে জিততে হলে কেন উইলিয়ামসন বিহীন নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডারকে দায়িত্ব নিতে হতো। আর সেই কাজটা করেছেন অভিজ্ঞ ডেভন কনওয়ে আর মেকশিফট নম্বর থ্রি রচীন রবীন্দ্র। শুরুতে উইল ইয়ং আউট হলেও দুজনের মারকুটে ব্যাটিংয়ে ১২.১ বলেই দলীয় শতক পূর্ণ করে কিউইরা।

এর আগে অবশ্য ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচে খেলতে নামা রবীন্দ্র ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন মাত্র ৩৬ বলে; কনওয়েও দেরি সেই মাইলফলক ছুঁতে দেরি করেননি। অর্ধশতক হাঁকানোর পরেও রান তোলার গতি কমাননি দুজনের কেউই, তাই তো বিশ ওভারের মধ্যেই স্কোরবোর্ডে জমা হয় দেড়শ রানের বেশি।

ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখাতে দেখাতেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়ে যান কিউই ওপেনার। সেই সাথে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নিজের নাম লেখেন রেকর্ড বুকে। এরপর ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক শতকের স্বাদ পান তরুণ রবীন্দ্রও।

দুই বাঁ-হাতির এমন পারফরম্যান্সে একটু বাড়তি খুশি খুঁজে নিতে পারে ব্ল্যাকক্যাপসরা, কেননা গত চার আসরেই প্রথম শতক হাঁকানো ব্যাটারের দলই শিরোপা জিতেছিল।

নিউজিল্যান্ড এবার শিরোপা জিততে পারবে কি না সেটা সময়ই বলবে, তবে কনওয়ে আর রবীন্দ্রের ব্যাটে ভর করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঠিকই জিতেছে তাঁরা। শুধু জেতেইনি, দুজনের অবিচ্ছিন্ন ২৭৩ রানের জুটিতে ইংল্যান্ডকে স্রেফ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে কিউইরা। এমন পরাজয়ের পর ঘুরে দাঁড়ানো নিঃসন্দেহে কঠিন ঠেকবে ইংলিশদের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link