শেষ হয়েও হইল না শেষ!

সরকারি দপ্তরের পেনশনের ফাইলের মত ঝুলে রইল ৩৫ রানের হিসেব-নিকেশ। অস্বস্তির এক রাত্রিযাপন। 

শেষ হয়েও হইল না শেষ। ওভাল টেস্ট যেন দিয়ে গেল রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের নির্জাস। শেষ বিকেলে লন্ডনের আকাশ ছেয়ে গেল ঘনকালো মেঘে। খেলা থেমে গেল আগেভাগেই। সরকারি দপ্তরের পেনশনের ফাইলের মত ঝুলে রইল ৩৫ রানের হিসেব-নিকেশ। অস্বস্তির এক রাত্রিযাপন।

ইংল্যান্ডের জয়ের জন্যে ৩৭৪ রান প্রয়োজন। কঠিন পথ। সেই পথ আরও কঠিন হয় ইংল্যান্ড ১০৬ রানে তিন উইকেট হারালে। চতুর্থ দিনেই হবে দফারফা- সবার ছিল তেমনই ধারণা। সেই ধারণাকে সত্য প্রমাণের ব্রত নিয়ে এগিয়ে এলেন হ্যারি ব্রুক।

১৯ রানের মাথায় মোহাম্মদ সিরাজের ভুলে জীবন পেয়ে ব্রুক ছুটলেন আপন গতিতে। টেস্টের সফেদ পোশাক গায়ে তিনি ব্যাট চালালেন ওয়ানডের বর্ণিল আভা ছড়িয়ে। ১১৪ স্ট্রাইকরেটের একটা শতক ছাড়ানো ইনিংস। শতবর্ষী বটবৃক্ষের শেকড় ছড়িয়ে জো রুটও বাইশ গজে আরও একবার থিতু হয়ে গেলেন।

জয় তখন ইংল্যান্ডের কাছে স্রেফ সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু পরিস্থিতি পালটে যেতে সময় লেগেছে সামান্যই। ব্রুকের বিদায়ের পর, কিছু দূর এগিয়ে রুটও ধরেন প্যাভিলিয়নের পথ। ১০৫ রানের ওই ইনিংসের সমাপ্তি ইংল্যান্ডের কপালেও ফেলে দিয়েছে চিন্তার ভাঁজ।

ইংল্যান্ডের জয়ের জন্যে প্রয়োজন ৩৫টি রান। অন্যদিকে ভারতের প্রয়োজন স্রেফ চারটি বল। দুর্ধর্ষ চারটি বলে রোমাঞ্চকর ওভাল টেস্টের ফলাফল চলে যাবে সফরকারীদের পকেটে। এই রোমাঞ্চের ফয়সালা হয়ে যেতে পারত চতুর্থ দিনের শেষ ঘন্টায়।

কিন্তু বাতাসের গা এলিয়ে ঘনকালো মেঘ জমল কেনিংটন ওভালের আকাশে। আম্পায়াররা জানালেন অনেক হয়েছে রোমাঞ্চ, এবার গিয়ে বৃষ্টি উপভোগ কর। কিন্তু উপভোগ করার উপায় কি আর আছে? দুই দলের ড্রেসিং রুমেই চোয়াল শক্ত করে শঙ্কার নয়ন হয়ে আছে স্থির। কি ঘটবে পঞ্চম দিনে? এই প্রশ্নের উত্তর মেলাতেও তো কেটে যাবে রাত। বৃষ্টি বরং রাতে এলেই পারত!

Share via
Copy link