জানা একাদশে অজানা সমীকরণ মিলবে পাকিস্তানের?

স্কোয়াড, একাদশ, ফর্ম যাই হোক না কেন পাকিস্তান শেষ বেলায় এসে কি করে যেন অজানা সমীকরণ মিলিয়ে ফেলার অভাবনীয় ক্ষমতা রাখে। যেমনটা তাঁর মিলিয়েছিল ২০১৭ সালে, তাহলে হবে নাকি আরেকটা ২০১৭?

পাকিস্তান দল মানেই অনিশ্চয়তা। কখনও তারা শূন্য থেকে শিখরে উঠে যায়, আবার কখনও সম্ভাবনার সর্বোচ্চ বিন্দু থেকেও ধসে পড়ে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যখন দোরগোড়ায়, পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ ঘিরে আলোচনার ঢেউ উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু এই একাদশ কি সত্যিই চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠার মতো?

পাকিস্তান দলের গোড়াতেই গলদ। ফখর জামান ও বাবর আজম — পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি যেন বারবার পরীক্ষা দিতে আসছে। বাবর ধারাবাহিকতার প্রতিমূর্তি, কিন্তু সেটা তিন নম্বরে। ওপেনার হিসেবে তিনি ব্যর্থ। ফখর ঝড় তুলছেন নিয়মিত, যেকোনো দিন প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিতে পারেন।

তাঁর অভিজ্ঞতা ও ফর্ম পাকিস্তানের এক্স ফ্যক্টর। অন্যদিকে, বাবরকে শুধু রান করলেই চলবে না, তাকে হতে হবে গেম চেঞ্জার, একজন সত্যিকারের লিডার। কিন্তু, ওপেনিংয়ে তিনি সেটা পারবেন? নাকি এই জায়গাটায় সৌদ শাকিলকে খেলানো যুক্তিযুক্ত?

সৌদ খেলছেন তিন নম্বরে। গেল ত্রিদেশীয় সিরিজে ছিলেন নিষ্প্রাণ। দুই ম্যাচ খেলে করেন ২৩ রান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুর একাদশেও তাঁর তিনে থাকার সম্ভাবনাই প্রবল। চারে রিজওয়ান আর পাঁচে সালমান আলী আঘা। মিডল অর্ডারকে সামলাতে হবে এই দু’জনকেই।

মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় ভরসা হতে পারেন সালমান আলী। ফরম্যাট যাই হোক, আছেন তিনি তুখোড় ফর্মে। অন্যদিকে, রিজওয়ান এবার শুধু উইকেটের পেছনে নয়, দলেরও নেতা। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের যে দলটা শেষ আইসিসি ইভেন্টের শিরোপা জিতেছিল, সেই দলের অধিনায়কও ছিলেন একজন উইকেটরক্ষক।

ছয়ে তায়াব তাহির, ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের পারফরম্যান্সের পর এবারও তিনি প্রথম একাদশই পাচ্ছেন। তিনি ইতিমধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু, অভিজ্ঞতার অভাব আছে এখানেও।

পাকিস্তানের সংকট এখানেই শেষ নয়। তিন পেসার নিয়ে খেলবে পাকিস্তান। শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ ও হারিস রউফ— তিনজনই বিশ্বমানের, তিনজনই ভয়ঙ্কর। শাহীন নতুন বলে প্রতিপক্ষের হৃদস্পন্দন বন্ধ করে দিতে পারেন, নাসিম তার নিখুঁত লাইন-লেংথে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন, আর হারিস রউফের গতির ঝড় ব্যাটারদের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে।

এতদিন তাই করে এসেছেন এই তিনজন, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কমে এসেছে তাঁদের ধার, লাইন লেন্থে মরচে ধরেছে। খোদ শাহীন আফ্রিদি এখন রান মেশিন, প্রতিপক্ষকে দেদারসে রান দিয়ে বেড়াচ্ছেন।

স্পিন বিভাগে অভিজ্ঞতার বিশাল সংকট আছে। একমাত্র স্পিনার আবরার আহমেদ। লেগ স্পিনার হিসেবে তার কার্যকারিতা থাকলেও, অভিজ্ঞতা কি বড় ম্যাচে তার বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না? ভারত যেখানে পাঁচ স্পিনার নিয়ে স্কোয়াড সাজিয়েছে, সেখানে পাকিস্তানের নাম মাত্র এক স্পিনার ঝুঁকির কারণ হবে।

তবে, দলটা পাকিস্তান বলেই যা একটু ভরসা। স্কোয়াড, একাদশ, ফর্ম যাই হোক না কেন পাকিস্তান শেষ বেলায় এসে কি করে যেন অজানা সমীকরণ মিলিয়ে ফেলার অভাবনীয় ক্ষমতা রাখে। যেমনটা তাঁর মিলিয়েছিল ২০১৭ সালে, তাহলে হবে নাকি আরেকটা ২০১৭?

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link