রিজওয়ান-আকিব দ্বন্দ্বে তছনছ পাকিস্তান!

চার দলের মধ্যে চতুর্থ! পাকিস্তান দলের ড্রেসিংরুমের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে বহু আগেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতায় ভেতরের গুঞ্জন চলে আসল দলের বাইরে। ভেতরের চাপে ধীরে ধীরে ফেটে যাচ্ছিল সেলাইয়ের একেকটা ফাঁক – বাইরের দুনিয়া তাঁর খবর না রাখলেও তাঁর প্রভাবটা ছিল মাঠে স্পষ্ট।

কোচ আকিব জাভেদ এবং অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের সম্পর্ক যে এখন আর স্বাভাবিক নেই, সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ব্যর্থতার পর। দলের দুই শীর্ষ ব্যক্তিত্ব যখন নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে টানাটানিতে ব্যস্ত থাকেন, তখন যে মাঠে তার প্রতিফলন পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দুইজনের মধ্যেই মতবিরোধ ছিল প্রবল।

রিজওয়ান চেয়েছিলেন খুশদিল শাহকে দলে নিতে, কিন্তু আকিব সেই প্রস্তাবে সোজা ‘না’ বলে দেন। তিনি দলে অন্তর্ভুক্ত করেন ফাহিম আশরফকে। কেবল এখানেই নয়, স্কোয়াড গঠনের সময় থেকেই অধিনায়ক-নির্বাচকদের মধ্যে একাধিক বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। পরে অবশ্য দু’জনেরই ঠাই হয় দলে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ঠিক আগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি দু’বার নির্বাচিত স্কোয়াডের তালিকা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বোর্ডের পক্ষ থেকে কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করা হলেও সেসব আদৌ গুরুত্ব পায়নি। নকভি চাইলে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে পরিবর্তন আনতে পারতেন, কিন্তু তিনি সেটি করেননি। ফলাফল পাকিস্তান টুর্নামেন্টে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এই ব্যর্থতার দায় শেষ পর্যন্ত কার? কোচ আকিব জাভেদ তো নিজের অবস্থান ছাড়তে নারাজ। বোর্ড তাকে অন্তর্বর্তিকালীন কোচ হিসেবে এনেছিল, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর তার ভবিষ্যৎ যে নিশ্চিতভাবে অনিশ্চিত, সেটা বলে দিতে হয় না!

এদিকে, দল ভরাডুবির পর এবার সমর্থকদের ক্ষোভ সামাল দিতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পিসিবি। নির্বাচক কমিটিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হতে পারে। বাবর আজমের ধারাবাহিক ব্যর্থতা চিন্তায় ফেলেছে বোর্ডকে। এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি নিজেকে খুঁজে ফিরছেন, কিন্তু ফিরতে পারছেন না।

জাভেদ এবং নির্বাচকরা নিজেদের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু সত্যটা তো অন্য কিছু বলছে! ভুল দল নির্বাচন, বাজে ট্যাকটিকস, অপ্রীতিকর ড্রেসিংরুম পরিবেশ, অধিনায়কে অনাস্থা — সব মিলিয়ে পাকিস্তানের এই ব্যর্থতা যেন এক পূর্বনির্ধারিত ট্র্যাজেডি!

Share via
Copy link