নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেমিফাইনালে দাপুটে জয়ে তৃতীয় বারের মত বিশ্ব টি টোয়েন্টির আসরের ফাইনালে উঠেছে বাবর আজমের পাকিস্তান। রবিবার ১৩ নভেম্বর মেলবোর্ন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। আর এই জয়ের পরেই পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের বন্দনায় মেতে উঠেছে পাকিস্তানের জনগন থেকে শুরু করে সমস্ত বিশ্ববাসী।
পিছিয়ে নেই পাকিস্তানের সাবেক তারকা ক্রিকেটারও। খেলা শেষ হওয়ার সাথে সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তান দলকে অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন পোস্ট, টুইট করেছেন। অনেকে ইউটিউবে নিজেদের চ্যানেলে আলাদা করে ভিডিও পোস্ট করেও অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তান দলকে।
রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত সাবেক পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার তাঁর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে পাকিস্তান কে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ যেন ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপেরই স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। নিউজিল্যান্ড, তোমরা ১৯৯২,১৯৯৯, ২০২২ তিনবারই সেমিফাইনালে হেরেছ। তোমরা পুরো খেলাতে মাত্র কয়েকটি ভুল করেছ,আর খেলায় হেরে তারই খেসারত দিতে হল।তবে আমি পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানাতে চাই।’
শোয়েব আরও বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ হারার পরে সত্যি কথা বলতে আমি বিশ্বাসই করিনি যে পাকিস্তান সেমিফাইনালে আসবে। কিন্তু পাকিস্তানের সাথে পুরো দেশের দোয়া এবং ভালবাসা ছিল। সেই সাথে নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় সাহায্য করলে বাকি টুকু শুধুমাত্র দলগত নৈপুণ্যেই সম্ভব হয়েছে।’
শোয়েব ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর অন্যতম সেরা পারফরমার ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমাদের খাদের কিনারা থেকে ফিরে আসার অনেক উদাহরণ আছে। শুধু তাই নয়, এটা আমাদের পাকিস্তানিদের ব্যক্তিত্ব ও তুলে ধরে সমস্ত বিশ্ববাসীর সামনে। আমরা জাতি হিসেবে কতটা, শক্ত এবং প্রয়োজনের সময় চোয়াল শক্ত করে সকল প্রতিকূলতার বিপক্ষে লড়তে পারি!’
শোয়েব আরও বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড ম্যাচে অনেক ভুল করেছে,যখন তারা টসে জিতে ব্যাট করতে নামে,নেমেই আক্রমণ শুরু করে৷ অথচ ব্যাটে বল ঠিকমত আসছিল না। তাদের অন্তত কিছুটা সময় আগে পিচ বোঝার চেষ্টা করা উচিত ছিল। কিন্তু তারা তা করে নি৷ দিনশেষে তারা হেরেই সেসব ভুলের খেসারত দিয়েছে।’
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক এবং সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেন। ইমরান খান (৭২), জাভেদ মি্য়াঁদাদের (৫৮) সাথে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৩৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন। যা পাকিস্তান কে ফাইনালে ২৪৯-৬ করতে সহায়তা করে এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান ২২ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ট্রফি ঘরে তোলে। সেই ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক টুইটে তিনি বলেন, ‘বাবর এবং তার দলকে এরকম দারুণ জয়ের জন্য অভিনন্দন।’
এছাড়াও সুইং এর সুলতান খ্যাত ওয়াসিম আকরামও টুইট করেছেন। তিনি বলেন, ‘দারুণ পারফরম্যান্স। অভিনন্দন পাকিস্তান এবং অবশ্যই সমস্ত পাকিস্তানিদের। এখন ফাইনালটাকে উপভোগ করে খেলো।’
ওয়াসিমেরই বন্ধু আরেক সাবেক তারকা পেসার ওয়াকার ইউনুস বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ম্যাচ জয়ের জন্য অভিনন্দন।’
আরেক তারকা বুম বুম খ্যাত শহীদ আফ্রিদি তার টুইটে বলেন, ‘আমরা এখন ফাইনালে! আমাদের ছেলেরা তিন বিভাগেই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে,বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ে দারুণ করেছে। বাবর আজমকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায় অনেক অভিনন্দন।এটা আমাদের জন্য অনেক দরকার ছিল!’
সাবেক পাকিস্তানি ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজ তার টুইট বার্তায় বলেন, ‘মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।কিন্তু এটা আসলেই স্বপ্নেরই ফাইনাল। ছেলেদেরকে অভিনন্দন।’
সাবেক পাকিস্তানি স্পিনার সাঈদ আজমল তার টুইটে বলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন। বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানের দারুণ ব্যাটিং, সাথে শাহীন আফ্রিদির দারুণ বোলিং। সেই সাথে হারিসের ফিনিশিং।সব মিলিয়ে আমাদের জন্য জয়টা দরকার ছিল!’
আরেক পেসার ওয়াহাব রিয়াজ তার টুইটে বলেন, ‘অভিনন্দন পাকিস্তান। আসলেই আমাদের ছেলেরা জানে কিভাবে ম্যাচ এবং মন উভয়ই জিততে হয়!’
এছাড়াও ইউনুস খান, শোয়েব মালিক সহ আরও অনেক তারকা খেলোয়াড় সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের খেলোয়াড় এবং সাংবাদিকেরা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে।