ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হলেও, বাস্তবে এই স্কোয়াড নির্বাচন বিশ্বকাপের প্রস্তুতির দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বেশি। কারণ, এই সিরিজেই যাচাই হবে টিম কম্বিনেশনসহ সম্ভাব্য বিশ্বকাপ দলের অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন।
ঘোষিত স্কোয়াডে একদিকে যেমন রয়েছে নতুন মুখের উপস্থিতি, অন্যদিকে তেমনই একাধিক তারকা ক্রিকেটারের অনুপস্থিতিও পরিলক্ষিত হয়। বাবর, শাহীন কিংবা রউফের মতো তারকাদের অনুপস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করছে পিসিবিকে।
মূলত তাঁরা বর্তমানে বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) খেলছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও পিসিবের মধ্যে ইতোপূর্বেই মধ্যস্থতা হয়েছে ক্রিকেটারদের পুরো মৌসুম খেলার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য। তবে এই সিদ্ধান্ত বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য আদর্শ নয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

তবে চলমান বিগ ব্যাশ লিগেও বাবর কিংবা শাহিন, কেউই বিশেষ ছাপ ফেলতে পারেননি। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কা সিরিজে অংশ না নেওয়ায় বাবর আজমের বিশ্বকাপ দলে থাকা অনেকটাই নির্ভর করে তাঁর বিগ ব্যাশ পারফরম্যান্সের ওপর। সেখানে ব্যর্থ হওয়ায়, শ্রীলঙ্কা সিরিজে কেউ নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখাতে পারলে নির্বাচকেরা বিকল্প পথে হাঁটতেই পারেন।
প্রায় ছয় মাস পর আবারও পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন শাদাব খান। শ্রীলঙ্কা সিরিজে তাঁর অন্তর্ভুক্তি স্পষ্টতই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বিশ্বকাপের আগে শাদাবকে শেষবারের মতো বড় মঞ্চে যাচাই করে নিতে চায় পিসিবি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শাদাবের অভিজ্ঞতা প্রশ্নাতীত। ১১২ ম্যাচে ৭৯২ রান। ১৪০.১৭ স্ট্রাইকরেট। ১১২টি উইকেট। নিচের দিকে ব্যাট হাতে আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি, শ্রীলঙ্কার স্পিন সহায়ক উইকেটে তাঁর লেগ ব্রেক বোলিং বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না দিতে পারলেও শ্রীলঙ্কা সিরিজের স্কোয়াডে আবারও জায়গা পেয়েছেন নাসিম শাহ। ২০২৫ সালে টি-টোয়েন্টিতে তাঁর পারফরম্যান্স অত্যন্ত হতাশাজনক। তিন ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ৪ উইকেট, গড় ২৩ এবং ইকোনমি ৮.৪৫। ওয়ানডেতে কার্যকর হলেও টি-টোয়েন্টিতে নাসিম এখনও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। ফলে তাঁর অন্তর্ভুক্তি ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রমাণিত পেসারদের উপেক্ষিত হওয়া নিয়ে আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।
স্কোয়াড ঘোষণার সবচেয়ে চমকপ্রদ সিদ্ধান্তগুলোর একটি খাজা নাফেকে দলে নেওয়া। তবে একই সঙ্গে অবাক করেছে রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা মায সাদাকাতকে না নেওয়া। আলোচ্য টুর্নামেন্টে সাদাকাত ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। সংগ্রহ করেছেন ২৫৮ রান, স্ট্রাইক রেট ১২৯।
শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য ঘোষিত পাকিস্তান স্কোয়াডে যেমন কিছু সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী, তেমনি কিছু সিদ্ধান্ত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শাদাব খানের প্রত্যাবর্তন যুক্তিসঙ্গত হলেও, নাসিম শাহকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে বিতর্ক। সেই সাথে বাবর আজম, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফের অনুপস্থিতি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির দিক থেকে আদর্শ নয় বলেই মনে করছেন অনেকে।











