নিজেদের বাজিয়ে দেখেনি পাকিস্তান

আফগানিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়ে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি দারুণভাবে সেরেছে পাকিস্তান। স্পিন নির্ভর দলের বিপক্ষে এমন দাপুটে জয় নিশ্চিতভাবেই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিবে তাঁদের। তবে একটু পিছনে ফিরে দেখলেই বাবর আজমদের প্রস্তুতিকে ঘাটতি দেখা যায়।

২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের খুব কাছাকাছি গিয়েছিল পাকিস্তান। বর্তমানে ওয়ানডে ফরম্যাটে আইসিসির র‍্যাংকিংয়ে এক নম্বরেও আছে দলটি। কিন্তু, পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান আসলে নিয়মিত পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ খেলেনি।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর থেকে মাত্র ২৮ বার মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান ওয়ানডে দল। সবশেষ ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩ এই সময়ে এর চেয়ে কম ম্যাচ খেলেছিল ১৯৯২ বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে গিয়েছিল কেবল ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেই। কিন্তু সেসময়ের সাথে তুলনা করাটা বোকামি; আধুনিক ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচির কথা ভাবলে স্পষ্ট যে পাকিস্তান আসলে অনেক কম খেলার সুযোগ পেয়েছে।

 

শুধু ম্যাচসংখ্যা নয়, এই ২৮ ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষও আহামরি কেউ ছিল না। ভারত বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি এমন দলের বিপক্ষেই ছয়বার মুখোমুখি বাবর আজমের দল; এছাড়া নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলেছে আরো তিনবার।

আবার এশিয়া কাপের আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেললেও সেটাকে বিশ্বকাপের আদর্শ প্রস্তুতি বলার সুযোগ নেই। বড় দল বলতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তান; সেখানেও আবার কয়েক ম্যাচে কিউইদের পূর্ণ শক্তির দল ছিল না।

অবশ্য ফলাফলের দিক থেকে স্বাভাবিকভাবেই ভাল অবস্থায় আছে পাকিস্তান। ২৮ ম্যাচের মাঝে ১৯টিতেই জয় পেয়েছে তাঁরা; তবে বড় দলগুলোর বিপক্ষে কেমন করবে শাদাব, শাহীনরা সেটা এখনো অজানা রয়ে গিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের কথা বাহিরেই থাকুক; একই উপমহাদেশের দুই ক্রিকেট শক্তি বাংলাদেশ আর ভারতের সাথেও নিয়মিত খেলেনি পাকিস্তান। রাজনৈতিক কারণে ভারতের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা হয়, তবে বাংলাদেশের সাথে গত চার বছরে কোন সিরিজ না খেলা নি:সন্দেহে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) অদূরদর্শিতার প্রমাণ দেয়।

এমতাবস্থায় এশিয়া কাপে নিজেদের যাচাই করে নেয়ার সেরা মঞ্চ হতে পারে পাকিস্তানের জন্য। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে কেমন পারফর্ম করে হারিস রউফরা কিংবা বাংলাদেশের মত ভারসাম্যপূর্ণ ওয়ানডে দলের বিপক্ষে ফলাফল কি হয় সেসবই নির্ধারণ করে দিবে আগামী কয়েক মাস পাকিস্তানের সাথে কি ঘটবে।

অথচ ২০২৩ সালে ওয়ানডেতে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত বড় বড় টুর্নামেন্টের কথা মাথায় রেখে আরো বেশি ম্যাচ খেলতে পারলে এমন সংশয় নিয়ে থাকতে হতো না পাকিস্তানকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link