মাজিদ-আব্বাস বনাম ক্যারিবিয়ান পেস ব্যাটারি

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই ওপেনার সাদিক মুহম্মদকে (১) হারায় পাকিস্তান। তবে আরেক ওপেনার মাজিদ খান ও তিন নম্বরে নামা জহির আব্বাসের ব্যাটে চড়ে জয়ের পথেই এগোচ্ছিল তারা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে যোগ করেন ১৬৬ রান। মাজিদ-আব্বাস জুটির নান্দনিক স্ট্রোকপ্লের সামনে ক্যারিবীয় পেস ব্যাটারিকে একটা সময় মনে হচ্ছিল অসহায়।

১৯৭৯ বিশ্বকাপের ‘হাই ভোল্টেজ’ ম্যাচ। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। লন্ডনের ওভালে মুখোমুখি আসরের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে শেষ চারে ওঠে পাকিস্তান।

টসে জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক আসিফ ইকবাল নিয়েছিলেন বোলিং। লয়েড বাহিনীর শুরুটা হয়েছিল দারুণ। উদ্বোধনী জুটিতেই এসেছিল ১৩২ রান। দুই ওপেনার গর্ডন গ্রিনিজ (৭৩) ও ডেসমন্ড হেইন্সের (৬৫) ফিফটি, ভিভ রিচার্ডসের ৪২ আর কলিস কিংয়ের ‘ঝড়ো’ ৩৫ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৬০ ওভার শেষে ক্যারিবীয়রা তোলে ৬ উইকেটে ২৯৩ রান।

মাজিদ খান

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই ওপেনার সাদিক মুহম্মদকে (১) হারায় পাকিস্তান। তবে আরেক ওপেনার মাজিদ খান ও তিন নম্বরে নামা জহির আব্বাসের ব্যাটে চড়ে জয়ের পথেই এগোচ্ছিল তারা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে যোগ করেন ১৬৬ রান। মাজিদ-আব্বাস জুটির নান্দনিক স্ট্রোকপ্লের সামনে ক্যারিবীয় পেস ব্যাটারিকে একটা সময় মনে হচ্ছিল অসহায়।

একটু বলে নেয়া ভাল, হোল্ডিং, গার্নার, রবার্টস আর ক্রফটের মত ভয়ঙ্কর সব ফাস্ট বোলারে গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস অ্যাটাক তখন বিশ্বসেরা; সম্ভবত সর্বকালেরই সেরা! অথচ তাঁদের বিরুদ্ধেই কিনা অবলীলায় স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ব্যাটসম্যান।

সরফরাজ নওয়াজ

উইজডেন তাঁদের ম্যাচ রিপোর্টে লিখেছিল, ‘Runs flowed off the bat with surprising ease. Majid, ever-relaxed and seemingly having ever so much time to play his shots, and Zaheer the dazzling stroke-player, master on the off-side, put the fearsome bowling to the sword.’

জয়ের জন্য শেষ ২০ ওভারে পাকিস্তানের চাই ১১৮ রান। হাতে আছে ৯ উইকেট। এমন সময় হঠাৎ জ্বলে উঠলেন কলিন ক্রফট। মাত্র ১২ বলের আগুনঝরা এক স্পেলে তুলে নিলেন পাকিস্তানের ‘তিন’ ব্যাটিং স্তম্ভ মাজিদ খান (৮১), জহির আব্বাস (৯৩) এবং জাভেদ মিয়াঁদাদের (০) উইকেট। ১৭৬/১ থেকে মুহূর্তের মধ্যেই স্কোর ১৮৭/৪!

গর্ডন গ্রিনিজ

এদিকে অভিজ্ঞ হারুনুর রশিদ (১৫) কাটা পড়লেন রান আউটের খাঁড়ায়। তবে দ্রুত চার উইকেট হারালেও পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন তখনও বেঁচে ছিল। কিন্তু বাদ সাধলেন ভিভ রিচার্ডস। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন, ভিভ রিচার্ডস! পেসারদের স্বর্গে হঠাত করেই অফ স্পিনের ভেলকি নিয়ে হাজির হলেন তিনি।

একে একে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠালেন আসিফ ইকবাল (১৭), মুদাসসর নজর (২) এবং ইমরান খানকে (৬)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় তখন কেবলই সময়ের অপেক্ষা। দুই টেইল এন্ডার ওয়াসিম বারি (৯) এবং সরফরাজ নওয়াজকে (১২) আউট করে কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুঁকে দিলেন অ্যান্ডি রবার্টস।

আসিফ ইকবাল

২৯ বল বাকি থাকতেই ২৫০ রানে অলআউট পাকিস্তান। বোলারদের নৈপুণ্যে প্রায় ফসকে যাওয়া ম্যাচটা ৪৩ রানে জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল চলে যায় ফাইনালে।

বাকি গল্পটা তো সবারই জানা। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে দ্বিতীয় শিরোপা বাগিয়ে নেয় পরাক্রমশালী উইন্ডিজ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...