চিরবৈরী ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার বাইশ গজের লড়াইয়ে উত্তেজনার পারদ বরাবরই আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রোমাঞ্চকর সেই লড়াইয়ের ছিটেফোঁটাও মিলল না। তৈয়ব তাহিরের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে প্রায় একপেশে লড়াইয়ে ভারত ‘এ’ দলকে ১২৮ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান ‘এ’ দল।
অথচ গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে এই পাকিস্তান দলকেই এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। ৮ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালের আগে একমাত্র অপরাজিত দলও ছিল তারা। কিন্তু ফাইনালের মঞ্চে এসে সব কিছু উলট পালট গেল। পাকিস্তানের দেওয়া ৩৫৩ রানের লক্ষ্যে ভারতের ইনিংস শেষ হয় মাত্র ২২৪ রানে।
গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনালের মঞ্চ। ব্যবধানটা দিন পাঁচেকও না। তারপরও কিসের মহিমায় পাকিস্তানের এমন ঘুরে দাঁড়ানো? কোন সঞ্জিবনী শক্তিই বা ভর করলো তাদের উপরে, যার কারণে তারা এখন ইমার্জিং এশিয়া কাপের ব্যাক টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন। অবশেষে সেই রহস্য উন্মোচিত হল।
উন্মোচন করলেন ম্যাচের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান তৈয়ব তাহিরই। গ্রান্ড ফিনালের আগে ভাল খেলার মূলমন্ত্রটা নাকি তিনি পেয়েছেন স্বয়ং পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের কাছ থেকে!
ফাইনালের আগের দিনে ফোনে তৈয়ব তাহিরের সাথে কথা বলেছিলেন বাবর। আর সেই ফোনেই নব উদ্দামে উদ্দীপ্ত হয়েছিল পুরো পাকিস্তান দল।
তৈয়ব তাহিরের ভাষ্যমতে, ‘বাবর আজম দুর্দান্ত একজন খেলোয়াড়। একই সাথে দারুণ একজন মানুষও। তিনি ফোন দিয়েছিলেন। আগের ম্যাচ হারটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিতে বলেছিলেন। আর তিনি বারবার একটা কথাই বলেছিলেন আমাদের, পাকিস্তান বীর জাতি। আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। তবে খেলাটা অবশ্যই উপভোগ করতে হবে। ভাল খেলার পূর্ব শর্ত হলো, গেমটাকে উপভোগ করা। তাঁর কথা মতো, আমরা খেলাটাকে চাপ হিসেবে না নিয়ে উপভোগ করেছি এবং শিরোপা জিতেছি।’
ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার এ ফাইনালে ৭১ বলে ১০৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তৈয়ব তাহির। তাঁর ইনিংসেই মূলত বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় পাকিস্তান এ দল।
৩৫৩ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতের শুরুটা অবশ্য বেশ ভালোই হয়েছিল। দুই ওপেনার সাই সুদর্শন আর অভিষেক শর্মার সাবলীল শুরুতে ৮ ওভারেই ৬২ রান তুলে ফেলে ভারত। এরপরে উইকেট পতন হলে রানের গতি ঠিকই ধরে রেখেছিল ভারত।
কিন্তু ২৫ ওভারের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলে পথ হারায় ভারত। ২২৪ রানেই শেষ হয় তাদের ইনিংস। ফলত, টানা দ্বিতীয়বারের মতো এমার্জিং এশিয়া কাপের শিরোপা যায় পাকিস্তানের ঘরে।