২৬৫ রান? ওটা যথেষ্টই ছিল না। ভারতীয় ব্যাটারদের যতই কৃতিত্ব দিন, বোলারদের কৃতিত্ব তো ভুলে গেলে চলবে না।
২৬৫ রান, ওয়ানডের যুগে তেমন বড় কিছু নয়, তবে দুবাইয়ের উইকেটে বোলারদের জন্য অনেক কিছু ছিল না। একটু আন-ইভেন বাউন্স বাদ দিলে উইকেট ছিল স্পোর্টিং। অস্ট্রেলিয়া যখন ব্যাটিং করেছে, তখন বেশ দারুণ বল আসছিল ব্যাটে, বরং সেটা শক্ত হয় যখন ব্যাটিংয়ে নামে ভারত।
তাই, ফাইনালে ওঠার সিঁড়িটা প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত করেন বোলাররাই। মোহাম্মদ শামি শুরুটা করলেন ঝড়ের গতিতে, স্টিভেন স্মিথকে থামিয়ে দিলেন এক নিখুঁত ডেলিভারিতে, কনোলি-এলিসদেরও পাঠিয়ে দিলেন প্যাভিলিয়নে। বরুণ চক্রবর্তী তাঁর বুনো জাদুতে থামিয়ে দিলেন ট্রাভিস হেডকে—ভারতের ২০২৩ সালের ফাইনালের দু:স্বপ্ন যে এবার স্বপ্ন হয়ে ফিরল! সব কিছুর পেছনে ছিলেন মাস্টারমাইন্ড রোহিত শর্মা।
মোহাম্মদ শামি শুরুতে কুপার কনোলিকে ফেরান। এরপর থিতু হওয়া স্টিভেন স্মিথের স্টাম্প উড়িয়ে দিলেন ফুলটসে। শেষদিকে নাথান এলিসকেও ফেরান তিনি, ৩ উইকেট তুলে নিয়ে নিজের কাজটা ঠিকঠাক সেরে রাখলেন। বুঝিয়ে দিলেন, পেস আক্রমণে নেতা তিনিই।
ভারতীয় বোলিংয়ের রহস্যময় অস্ত্র বরাবরই ছিলেন বরুণ চক্রবর্তী, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নেওয়া বরুণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও ছিলেন সরব। দু’টো উইকেট নেন, এর মধ্যে ছিলেন বিগ ফিশ ট্রাভিস হেড। তাঁর আঁটসাঁট বোলিং মাঝের ওভারে গতি কমিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের।
রবীন্দ্র জাদেজা তো বরাবরই বড় ম্যাচের খেলোয়াড়। ৪০ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। মার্নাস ল্যাবুশেন আর জশুয়া ইংলিসকে ফিরিয়ে দেন তাঁর পছন্দের উইকেটে। অস্ট্রেলিয়া ২৬৪ রান তুললেও, একটা সময় মনে হচ্ছিল আরও বড় স্কোর গড়বে তারা। জাদেজা সেটি হতে দেননি।
জাদেজা ছিলেন আগুনের মতো, ল্যাবুশেন আর ইংলিসকে ফিরিয়ে ভারতীয় ফিল্ডারদের মাঝে ছড়িয়ে দিলেন উল্লাস। আর এরপর? এরপর ছিল এক মহাকাব্যিক তাড়া, ছিল এক চিরচেনা ছবি—ভালোবাসার নাম বিরাট কোহলি, হাতে তলোয়ারের মতো ব্যাট, প্রতিপক্ষের বুকে ভয়, সাথে যোগ হলেন লোকেশ রাহুল-হার্দিক পান্ডিয়ারা। আর স্কোরবোর্ডে লেখা — ‘ভারত জয়ী!’ আরেকটি বিশ্ব শিরোপা থেকে মাত্র এক ম্যাচ দূরে ভারত!