চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল – ভারতের ভরসার পাঁচ স্তম্ভ

ভারত থেকে লাখো সমর্থকের চোখ থাকবে একটাই স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায়—আরেকটি আইসিসি ট্রফি ঘরে তোলার জন্য। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে দাপুটে এক অভিযানের পর সামনে এখন শেষ বাঁধা। এই মহারণে জিততে হলে এগিয়ে আসতে হবে কিছু নির্দিষ্ট ক্রিকেটারকে, যারা একা হাতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

ভারত থেকে লাখো সমর্থকের চোখ থাকবে একটাই স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায়—আরেকটি আইসিসি ট্রফি ঘরে তোলার জন্য। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে দাপুটে এক অভিযানের পর সামনে এখন শেষ বাঁধা। এই মহারণে জিততে হলে এগিয়ে আসতে হবে কিছু নির্দিষ্ট ক্রিকেটারকে, যারা একা হাতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

ভারতের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে পাঁচ খেলোয়াড় — বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, হার্দিক পান্ডিয়া, বরুণ চক্রবর্তী ও রবীন্দ্র জাদেজা। এই পাঁচজনের পারফরম্যান্সই ঠিক করে দিতে পারে, চ্যাম্পিয়নদের মঞ্চে ট্রফিটা কার হাতে উঠবে।

  • বিরাট কোহলি: ফাইনালের জন্য তৈরি রাজা

এই মঞ্চটাই তাঁর জন্য! বড় ম্যাচ মানেই বিরাট কোহলি। চার ম্যাচে ২১৭ রান করে ফাইনালের আগে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরার। এক সেঞ্চুরি, এক ফিফটি—প্রতিটি ইনিংসেই তাঁর দৃঢ়তা চোখে পড়েছে।

কোহলির ব্যাটিং মানেই ক্লাস, মানেই শুদ্ধতা। স্পিনারদের বিপক্ষে তাঁর পায়ের কাজ দুর্দান্ত, পেসারদের বিরুদ্ধে টাইমিং অনন্য। সবচেয়ে বড় ব্যাপার—তিনি জানেন কীভাবে ম্যাচ জিততে হয়। আগের ফাইনালগুলোর হতাশা ঝেড়ে ফেলে এবার কি কোহলি এনে দেবেন সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত?

  • শ্রেয়াস আইয়ার: মিডল অর্ডারের কাণ্ডারি

ভারতের মিডল অর্ডারে এখন নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন শ্রেয়াস আইয়ার। ধারাবাহিকভাবে রান করছেন, পরিস্থিতি বুঝে খেলছেন, আর বিপদের সময়ও স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে পারেন। তিন নম্বরে এসে কিংবা চার নম্বরে নেমেও ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখেন তিনি।

এই টুর্নামেন্টেও বেশ ভালো ফর্মে আছেন আইয়ার। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর ব্যাট থেকে আসা এক ঝকঝকে ইনিংসই হয়তো গড়ে দেবে ভারতের শিরোপার ভিত।

  • হার্দিক পান্ডিয়া: ভারতের এক্স-ফ্যাক্টর

ভারতের জয়ের অন্যতম চাবিকাঠি যদি কেউ হন, তবে সেটা হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং—তিন ডিপার্টমেন্টেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সামর্থ্য আছে তাঁর। এই টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে বড় ইনিংস না পেলেও দ্রুত রান তোলার কাজে দুর্দান্ত ছিলেন।

ফাইনালের মঞ্চে তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সটাই হতে পারে পার্থক্য গড়ে দেওয়া ফ্যাক্টর। ম্যাচ যদি শেষ ওভারে যায়, ভারত চায় ম্যাচ জেতানো একজন হার্দিক পান্ডিয়াকে।

  • বরুণ চক্রবর্তী: স্পিন জাদুকরের পরীক্ষা

এই এক নামই হয়তো ফাইনালের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। বরুণ চক্রবর্তীর বোলিংয়ের রহস্য এখনো অনেক ব্যাটারের কাছেই অজানা। তাঁর ভ্যারিয়েশন, স্লোয়ার ডেলিভারি, লেংথ মেশানো বোলিং—সবকিছুই হতে পারে প্রতিপক্ষের দু:স্বপ্ন।

ভারত বরাবরই আইসিসির নকআউটে স্পিনারদের ওপর নির্ভর করেছে। এই ম্যাচেও বরুণ সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ফাইনালে ব্যাটাররা যখন চাপে থাকবে, তখন বরুণের একটা স্পেলই খেলার ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে।

  • রবীন্দ্র জাদেজা: ভারতের ‘সুইস-আর্মি নাইফ’

টুর্নামেন্ট জুড়ে বল হাতে কার্যকর ছিলেন,  নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। এই ফাইনালেও ভারতের জয় নির্ভর করবে তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের ওপর। বিপক্ষ যখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিতে চাইবে ভারতকে, তখনই হয়তো জাদেজা ছোবল মেরে দেবে।

ফাইনালে জিততে হলে শুধু ব্যাটিং-বোলিং নয়, দরকার ফিল্ডিংয়ে অতিরিক্ত স্পার্ক। আর সেটার নাম রবীন্দ্র জাদেজা! ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারেন, বল হাতে উইকেট আনতে পারেন, আর ফিল্ডিংয়ে তো তিনি জীবন্ত ম্যাজিক!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link