জেল থেকে আমি বলছি…

ফুটবলার রোনালদিনহোকে আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। বল পায়ে তিনি ফুটবলার নয়, বরং জাদুকর ছিলেন। তবে নকল পাসপোর্ট ব্যবহারের অভিযোগে প্যারাগুয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে। সেই যাত্রায় ৩২ দিন জেলখানায় থেকে তারপর মুক্তি মিলেছিল তাঁর।

ফুটবলার মাঠে ফুটবল খেলবেন, গোল করবেন। দর্শক গ্যালারিতে বসে হাততালি দিবে। এটাই তো হওয়ার কথা, কিন্তু আপনার প্রিয় তারকা যদি কারাগারের চার দেয়ালের মাঝে বন্দি হয় – তাহলে কেমন লাগবে? ইতিহাসে অনেক ফুটবলারই অবশ্য বন্দি হয়েছেন আইনের হাতে;. তাঁদের মধ্যে বিখ্যাতদের নিয়ে খেলা-৭১ এর আজকের আয়োজন।

  • রোনালদিনহো

ফুটবলার রোনালদিনহোকে আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। বল পায়ে তিনি ফুটবলার নয়, বরং জাদুকর ছিলেন। তবে নকল পাসপোর্ট ব্যবহারের অভিযোগে প্যারাগুয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে। সেই যাত্রায় ৩২ দিন জেলখানায় থেকে তারপর মুক্তি মিলেছিল তাঁর।

  • দানি আলভেস 

রোনালদিনহোর তুলনায় দানি আলভেসের অপরাধ অনেক বেশি, নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। স্পেনের একটি নাইটক্লাবে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে সাড়ে চার বছরের জেল এবং ১ লক্ষ ৫০ হাজার জরিমানা করা হয় তাঁকে। যদিও এক মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে জামিন নিয়েছেন তিনি। তবে ইতিহাসের অন্যতম সাফল্যমন্ডিত ফুটবলারের এ রূপ স্তব্ধ করে দিয়েছে সমর্থকদের।

  • জর্জ বেস্ট

ফুটবলের ইতিহাসের সেরা ব্যাডবয়দের একজন জর্জ বেস্ট, অ্যালকোহলের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা ছিল নিয়মিত ঘটনা। একবার অ্যালকোহল পান করে গাড়ি চালানোর কারণে ধরাও পড়েন তিনি, সেই সাথে দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন। ফলাফল – তিন মাসের জেল।

  • টনি অ্যাডামস 

আর্সেনালের অতীত ঘাঁটলেই একটা নাম অবধারিতভাবে চলে আসবে, টনি অ্যাডামস। অধিনায়ক হিসেবে আর্সেনালকে লিগ শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি; তবে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে দুই মাস কারাগারে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। সেটা অবশ্য অ্যাডামসকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে; নিজে অ্যালকোহল ছেড়ে দিয়েছিলেন, এবং অনেককে সাহায্য করেছেন নেশার জগত থেকে বেরিয়ে আসতে।

  • ফ্রেডি রিঙ্কন 

মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ব্রাজিলিয়ান পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ফ্রেডি রিনকনকে। চার মাস জেলেও ছিলেন তিনি, এরপর পানামা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ফুটবলার হিসেবে ফ্রেডি অবশ্য মনে রাখার মতই ক্যামেরনের সোনালী প্রজন্মের সদস্য ছিলেন, খেলেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের মত ক্লাবেও।

  • ইয়ান রাইট

গানার্সদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার ছিলেন ইয়ান রাইট। তবে তাঁর দুর্দান্ত ফুটবলার হওয়ার পিছনে রয়েছে জেলখানার গল্প। কিশোর বয়সে ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করে জরিমানা দিতে না পারায় জেলে যেতে হয় তাঁকে। এই ঘটনা পরবর্তীতে রাইটের জীবনকে আরো সুশৃঙ্খল করে তুলেছিল।

  • ইউলি হোয়েনবি

বায়ার্ন মিউনিখ এবং জার্মান ফুটবলের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ চরিত্র ইউলি হোয়েনবি। বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলারের হাতে হাতকড়া উঠেছিল কর ফাঁকির কারণে। প্রায় ৩০ মিলিয়ন ইউরো কর ফাঁকির মামলায় সাড়ে তিন বছরের জেল হয় তাঁর, যদিও দেড় বছরের মাথায় মুক্তি পান তিনি।

  • রবিনহো

ব্রাজিলের আরো এক আক্ষেপ রবিনহো, অসম্ভব প্রতিভাবান এই ফুটবলার হেলাফেলায় হারিয়েছেন নিজেকে। কিন্তু চরিত্রও ঠিক রাখতে পারেননি তিনি, মিলানে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপর ইতালির আদালত নয় বছর কারাবাসের আদেশ দেয়, ব্রাজিলে থাকায় এখনো তাঁর শাস্তি কার্যকর হয়নি। তবে শীঘ্রই সেটা হওয়ার কথা।

  • রেনে হিগুইতা

অবিশ্বাস্য সব পাগলামির জন্য রেনে হিগুইতার খ্যাতি ছিল বিশ্বজুড়ে। তবে সেই খ্যাতিতে দাগ লাগে যখন জানা যায় কিডন্যাপিংয়ে জড়িত ছিলেন তিনি। সেজন্য সাত মাস আটক রাখা হয় তাঁকে, যদিও আটক থাকা অবস্থায় ১৯৯৮ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

  • ম্যাসন গ্রিনউড

প্রতিভা বিবেচনায় ম্যাসন গ্রিনউড ছিলেন ফুটবলের নেক্সট সুপারস্টার। কিন্তু বান্ধবীকে নির্যাতনের অভিযোগে জেলে যেতে হয় তাঁকে, সেখান থেকে আর ওই অর্থে ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি তাঁর। একরকম হারিয়েই গিয়েছেন তিনি।

আরো অনেক ফুটবলারই নারী, মদ, ট্রাফিক আইন, প্রতারণা ইত্যাদি কারণে আইনের হাতে বন্দি হয়েছিলেন। বেঞ্জামিন মেন্ডি, রুবেন সেমেদোর মত সাম্প্রতিক উদাহরণ যেমন আছে তেমনি কয়েক প্রজন্ম আগের গ্রাহাম রিক্স, পিটার স্টোরের নাম বলা যায়।

Share via
Copy link