উইকেট প্রায় মিরপুরের মতোই ছিল। মন্থর, নিচু বাউন্সের, ট্রিকি – এই আদর্শ উইকেটেও মুস্তাফিজুর রহমান এরকম বোলিং করলে আর কিছু করার-বলার থাকে না। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও হজরতুল্লাহ জাজাই আউট হওয়ার পর ম্যাচটি একমাত্র জেতাতে পারতেন নাজিবউল্লাহ। গত এক-দেড় বছরে অসাধারণ কিছু ইনিংস তিনি খেলেছেন। তাকে থামানোর জন্য তো মুস্তাফিজের দিকেই তাকিয়ে থাকবে দল!
একটা ক্রিকেট ম্যাচ হারার পর স্রেফ একজনের দিকে আঙুল তোলা উচিত নয় অবশ্যই। অনেক কিছুই তো গলদ ছিল। তবে আজকে সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার ছিল এই উইকেটে মুস্তাফিজের এমন বোলিং।
ব্যাটিং নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। এই যে মোহাম্মদ নাঈম শেখকে খেলানো হলো, প্রক্রিয়াটা কি? প্রথম ঘোষিত স্কোয়াডে দুই ওপেনার ছিলেন বিজয় ও ইমন। তার মানে, তাঁরা আপনার সেরা দুই পছন্দ। নাঈম শেখকে পরে নেওয়া হলো আরেকজনের চোটে বদলি হিসেবে। তাহলে তাকে একাদশে নেওয়া মানে আপনাদের প্রথম ঘোষিত দলটা ভুল ছিল! নিজেদের থুথু আপনারা গিলেছেন!
আফগানিস্তানের বিপক্ষে নাঈম সেঞ্চুরি করলেও কি এই সিলেকশন জাস্টিফাইড হতো? প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলো এখানে? এমন নয় যে ইমন বা যে কাউকে নিলে বা ওপেন করালে হাতি-ঘোড়া করে ফেলত। সবার সামর্থ্যই জানা আছে। তবে প্রসেস তো অনুসরণ করতে হবে!
মুজিব উর রহমানের যে কটি বল আজকে বিজয় খেলেছেন, মনে হলো তাকে হাত-পা বেঁধে অথৈ সাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অ্যাটিটিউডের কথা তো পরে।
আপনারা বাজনা বাজালেন মেক শিফট ওপেনার নিয়ে। অমুক-তমুককে ওপেন করাবেন। নতুন কিছু বাজিয়ে দেখবেন। কাজে লাগুক বা না লাগুক, অন্তত নতুন কিছু চেষ্টা তো করা যেত। কিন্তু যথারীতি সেই লাউ-কদুর গল্প।
আপনারা নতুন ঘরানার গান গাইলেন। আগ্রাসী মানসিকতা, আক্রমণের বার্তা, বদলে যাওয়া শরীরী ভাষা, আরও কত কী – অথচ সেই থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়। এরকম উইকেটে কেন তিন পেসার খেলানো হলো, কেন নাসুম আহমেদকে খেলানো হলো না, বুঝে উঠতে পারছি না।
আপনারা সাব্বির রহমানকে নিয়ে গেলেন। তাকে আপনারা বসিয়ে রাখলেন। তাহলে স্কোয়াডে নেওয়ার মানে কী ! বিশেষ পরিকল্পনা থেকেই তো তাকে নেওয়ার কথা। নইলে তো স্কোয়াডে নেওয়ারই কোনো যুক্তি নেই। আরও অনেক কিছু বলা যায়। ক্ষান্তি দেই বরং।
দলের একটা ‘নতুন শুরু’-তে একটা ম্যাচ দিয়ে অবশ্যই জাজ করছি না। ম্যাচ হারাটা খুব অপ্রত্যাশিতও নয়। কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন আর ঘরানা বদলের ছাপটা কিছুটা হলেও দেখতে চেয়েছিলাম। তা দেখা গেল না। মনে হলো আগের দলই খেলছে, আগের মানসিকতাই রয়ে গেছে।
যাই হোক, দল যত খারাপ ফর্মেই থাকুক, হার সবসময়ই হতাশার। তবে আরও বেশি হতাশার ব্যাপার, এই উইকেটে মুস্তাফিজের বোলিং আর মানসিকতায় সেই আগের জায়গায় পড়ে থাকা।
সুপার ফোর-এ যাওয়ার সুযোগ তো এখনও আছেই। তবে সেখানে যাওয়া বা না যাওয়া নিয়ে আসলে ব্যক্তিগতভাবে আমার ভাবনা খুব একটা নেই। মানসিকতা আর ঘরানায় পরিবর্তনের সূচনা দেখতে চাই। সেটা কবে হবে?
অভিনন্দন আফগানিস্তান। সুপার ফোর-এ বড় ম্যাচের চাপ তারা কতটা নিতে পারবে, নিশ্চিত নই। তবে এমন শুরুর পর ফাইনাল খেলতে না পারলে নিজেদের প্রতি সুবিচার হবে না তাঁদের।
– ফেসবুক থেকে