পানির মত রাহুল, ব্যাট হাতে আগুন

এ কারণেই তাকে পানির সাথে তূলনা করা যায় অনায়াসে। তিনি যেকোন জায়গায় অবলীলায় মানিয়ে নিতে পারেন। পারফরমও করতে পারেন দলের চাহিদা মেনে।

লোকেশ রাহুল রীতিমত পানি। যে পাত্রে তাকে রাখা হবে, সে পাত্রের আকারই তিনি ধারণ করবেন। দলের প্রয়োজনে নিজেকে বদলে ফেলতে পারেন। দলের প্রয়োজন অনুযায়ী নিজের ব্যাটিং অর্ডারেও পরিবর্তন আনতে দ্বিধা নেই। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে গত বছরের গ্লানি মুছে নতুন উদ্যমে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে।

লখনৌ সুপার জায়ান্টসের জার্সিতে গত আসরেও খেলেছেন লোকেশ রাহুল। কিন্তু হুট করেই লখনৌয়ের কর্তাদের অপছন্দের পাত্রে পরিণত হন তিনি। ৫২০ রান করেছিলেন তিনি। কিন্তু তবুও সঞ্জীব গোয়েঙ্কার চক্ষুশূল হয়েছিলেন রাহুল। দলকে প্লে-অফে নিয়ে যেতে না পারায় মাঠের মধ্যেই বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা গিয়েছিল তাদেরকে।

তাইতো রাগ থেকেই রাহুল সিদ্ধান্ত নেন, লখনৌয়ের জার্সি আর নিজের গায়ে চড়াবেন না তিনি। তাছাড়া গত আসরে তার স্ট্রাইকরেট নিয়েও ছিল বহু প্রশ্ন। ১৩০ এর ঘরে ছিল তার স্ট্রাইকরেট। নিদেনপক্ষে ৩০০ রান করা কোন ব্যাটারের স্ট্রাইকরেট রাহুলের চাইতে কম ছিল না। এ নিয়ে নানা সমালোচনা সইতে হয়েছে তাকে।

সেসব সমালোচনা জ্বালানি হিসেবে কাজ করেছে রাহুলের জন্যে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন দলকে শিরোপা জেতাতে। সেই ধারা তিনি অব্যাহত রাখতে চাইছেন যেন আইপিএলের মঞ্চেও।

তাইতো চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে আরও একটিবার নিজের সামর্থ্যের গল্প বলে গেলেন তিনি। চিপকের ধীর গতির উইকেটে দাঁড়িয়ে তিনি ব্যাটিং করেছেন প্রায় ১৫১ স্ট্রাইকরেটে। ৫১ বলে ৭৭ রানের ইনিংসটিতে তিনি দিল্লির সংগ্রহের ভিত্তি পোক্ত করে দেন। কিন্তু ঠিক আগের ম্যাচেই তিনি আউট হয়েছিলেন স্রেফ ১৫ রান করে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমেছিলেন চার নম্বর পজিশনে।

ঠিক পরের ম্যাচেই তিনি চলে এলেন ওপেনিং পজিশনে। এ কারণেই তাকে পানির সাথে তূলনা করা যায় অনায়াসে। তিনি যেকোন জায়গায় অবলীলায় মানিয়ে নিতে পারেন। পারফরমও করতে পারেন দলের চাহিদা মেনে। ঠিক এ কারণেই হয়ত ভারত জাতীয় দলের ঋষাভ পান্তের চাইতেও এগিয়ে রাখা হয় লোকেশ রাহুলকে।

তাছাড়া নিজেকে প্রমাণের একটা অদম্য ইচ্ছে তার মধ্যে কাজ করে প্রতিনিয়ত। সে কারণেই তো ব্যাটের প্রতিটি আঘাতে তিনি সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে যেন জবাব দিতে চাইছেন। তার ব্যাটই যেন বলে দিতে চাইছে- ‘ভরসা রাখতে হয়, ভৎর্সনা করলে বরং তা বুমেরাং হয়’।

Share via
Copy link