যার দিন কাটে ইনজুরিতে সে কি আর দল সামলাবে? এমন তীর্যক সব মন্তব্যে সয়লাব হয়েছে ভারতের ক্রিকেট মহল। রজত পাতিদারকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর অধিনায়কত্ব দেওয়ার পর থেকেই তাকে নিয়ে সমালোচনা নয়, বরং নিন্দা শুরু হয়। কিন্তু নিন্দুকদের মুখে ঝামা ঠিকই ঘষে দিতে সক্ষম হয়েছেন রজত পাতিদার। এবারের ব্যাঙ্গালুরু রয়েছে ছন্দে, ঠেকছে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের অভাগা এক ফ্রাঞ্চাইজি। তাবড় তাবড় খেলোয়াড় থাকার পরও কোনবারই শিরোপা জেতা হয়নি তাদের। প্রতিবারই ক্রাঞ্চ মোমেন্টে গিয়ে খেই হারিয়েছে দলটি। এ বছর কাপ আমাদের- স্লোগানটাও পরিণত হয়েছিল হাস্যরসের খোরাকে।
কিন্তু এদফা যেন সত্যিই ব্যাঙ্গালুরুর সমর্থকরা আরও একটিবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে। এর মূল কারণ সেই রজত পাতিদার। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচের মধ্যে চার ম্যাচ জিতেছে ব্যাঙ্গালুরু। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারের মধ্যেই রয়েছে দলটি অবস্থান।
অনেকে হয়ত বলতেই পারে, এতে আবার রজতের কৃতীত্ব কি? অধিনায়কের কৃতীত্ব অবশ্যই অনস্বীকার্য। রজতের অধিনায়কত্বকে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও বিরাট কোহলির অধিনায়কত্বের মিশ্রণ বলে আখ্যায়িত করছেন ভারতের সাবেকদের মধ্যে কেউ কেউ।
কঠিন মুহূর্তে শান্ত থাকতে পারেন রজত পাতিদার। ঠিক যেমন ভাবলেশহীন থাকতেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আবার প্রয়োজনের মুহূর্তে আগ্রাসী সিদ্ধান্ত নিতেও ভয় করেন না রজত পাতিদার। একেবারে বিরাট কোহলির অনুলিপি। এই দুইয়ের মিশেল ঘটিয়ে দারুণভাবে তিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে।
তাছাড়া সর্বশেষ সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। মধ্য প্রদেশকে ফাইনালে অবধি তুলেছিলেন। তিনি তার হাতে থাকা রসদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে জানেন। সেটাই বরং করছেন এবারের আইপিএলে। তাছাড়া দলের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান করে সামনে থেকেই দলকে দিচ্ছেন নেতৃত্ব।
ক্রাঞ্চ মোমেন্টে তিনি ঘাবড়ে না গেলেই এবার হয়ত খুলে যেতে পারে শিরোপার জট। খরা কাটিয়ে শিরোপার উৎসবে মেতে উঠবে গোটা ব্যাঙ্গালুরু। বিরাটের হাতে শিরোপা দেখা স্বপ্নও হবে পূরণ। সেজন্যে রজতকে প্রয়োজন। ইনজুরি মুক্ত রজতের সার্ভিস পাওয়ার প্রত্যাশায় ব্যাঙ্গালুরু ফ্রাঞ্চাইজি।