বিফলে মুস্তাফিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স

বোলাররা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে ৩৩ রানে হেরেছে রাজস্থান রয়্যালস। নিজেদের নবম ম্যাচে আজ হেরে প্লে অফের দৌড় থেকে অনেকটাই পিছিয়ে গেল সাঞ্জু স্যামসনের দল। আর দুর্দান্ত জয়ে আবারো পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান উদ্ধার করেছে দিল্লি ক্যাপিটালস।

দল হারলেও বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। চার ওভারে ২২ রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করেন এই পেসার। চার ওভারে কোন বাউন্ডারি হজম করতে হয়নি তাকে। তৃতীয় উইকেটে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ঋষভ পান্ত ও শ্রেয়াস আইয়ারের ৬২ রানের জুটি ভাঙার পর ডেথ ওভারে ঝড় তোলা শিমরন হিটমায়ারকেও ফিরিয়ে দেন তিনি।

তবে বোলাররা দারুণ করলেও ১৫৫ রান তাড়া করতে নেমে ব্যর্থ ছিলেন ব্যাটসম্যান। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি রাজস্থান রয়্যালসের। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারেই ফিরে যান দুই ওপেনার লিয়াম লিভিংস্টোন ও জয়স্বী জয়সওয়াল।

আভিষ খানের প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ৩ বলে ১ রান করে লিভিংস্টোন ফিরে যাওয়ার পরের ওভারের প্রথম বলে ৪ বলে ৫ রান করে একই ভাবে ফিরে যান জয়সওয়াল।

৬ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রবিচন্দ্রন আশ্বিনের দারুণ এক ডেলিভারিতে ডেভিড মিলার স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পরলে ১৭ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রাজস্থান। ১০ বলে ৭ রান আসে মিলারের ব্যাট থেকে। এরপর মহিপাল লোমররকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাঞ্জু স্যামসন। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি দু’জন। ২৪ বলে ১৯ রান করে লোমরর ফিরে গেলে ভাঙে ৩১ রানের জুটি।

লোমররের বিদায়ের পর রায়ান পরাগ ফিরে গেলে ৫৫ রানে ৫ উইকেটে হারিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় রাজস্থান। এরপর শেষের দিকে স্যামসন চেষ্টা করলেও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিলো না তা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান সংগ্রহ করে রাজস্থান। ৫৩ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত থাকেন সাঞ্জু স্যামসন।

দিল্লির বোলারদের ভিতর দুটি উইকেট শিকার করেন অ্যানরিক নরকিয়া। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন আভিষ খান, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কাগিসো রাবদা ও অক্ষর প্যাটেল।

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা দিল্লি ক্যাপিটালসের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওখার থেকেই দিল্লিকে চেপে ধরেন রাজস্থানের বোলাররা। তবে প্রথম তিন ওভারে ভালো করেও উইকেট বের করতে পারেননি তাঁরা। রাজস্থান প্রথম সফলতা পায় ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। আগের ম্যাচের নায়ক কার্তিক তিয়াগী আক্রমণে এসেই দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন।

এই পেসারের অফ স্ট্যাম্পের বেশ বাইরের বল খেলতে গিয়ে ইনসাইড হয়ে ফিরে যান শেখর ধাওয়ান। ৮ বলে ৮ রান আসে ধাওয়ানের ব্যাট থেকে। পরের ওভারেই চেতন সাকারিয়াকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ১২ বলে ১০ রান করে ফিরে যান আরেক ওপেনার পৃথ্বী শ। ২১ রানে দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন ঋষভ পান্ত ও শ্রেয়াস আইয়ার।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে দু’জন ৪৫ বলে যোগ করেন ৬২ রান। এই জুটি যখন ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল তখন জুটি ভাঙ্গতে মুস্তাফিজুর রহমানকে দ্বিতীয় বারের মত আক্রমণে আনেন সাঞ্জু স্যামসন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে জুটি ভাঙেন এই পেসার। মুস্তাফিজের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরে যান পান্ত।

২৪ বলে ২৪ রান করে পান্ত ফিরে যাওয়ার পর ৩২ বলে ৪৩ রান করা আইয়ারকে রাহুল তেওয়াতিয়া ফিরিয়ে দিলে ৯০ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দিল্লি। তবে তাতেও রানের গতি থেমে থাকেনি তাদের। চাপ কমাতে উইকেটে এসেই ঝল তোলেন শিমরন হিটমায়ার। তকে থামাতে দুই ওভার পর মুস্তাফিজকে আবারো আক্রমণে আনেন স্যামসন।

এবারো অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে দারুণ এক ইয়র্কারে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা হিটমায়ারকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ। ১৬ বলে ২৮ রান আসে হিটমায়ারের ব্যাট থেকে। এরপর অক্ষর প্যাটেল ফিরে গেলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে দিল্লি। রাজস্থানের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান ও চেতন সাকারিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দিল্লি ক্যাপিটালস: ১৫৪/৬ (ওভার: ২০; পৃথ্বী- ১০, ধাওয়ান- ৮, পান্ত- ২৪, আইয়ার- ৪৩, হিটমায়ার- ২৮, প্যাটেল- ১২) (মুস্তাফিজ- ৪-০-২২-২, সাকারিয়া- ৪-০-৩৩-২)

রাজস্থান রয়্যালস: ১২১/৬ (ওভার: ২০; জয়সওয়াল- ৫, লিভিংস্টোন- ১, স্যামসন- ৭০*, মিলার- ৭, লোমরর- ১৯, পরাগ- ২, রাহুল- ৯) (অশ্বিন- ৪-০-২০-১, প্যাটেল- ৪-০-১৭-১, নরকিয়া- ৪-০-১৮-২)

ফলাফল: দিল্লি ক্যাপিটালস ৩৩ রানে জয়ী।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link