ব্যাটিং কিংবা বোলিং কোনটাই ঠিক সেরাদের কাতারে না। তবে যেকোন পজিশনে ব্যাটিং করার ক্ষমতা ও মোটামুটি একটা পেস বোলিং দিয়ে তিনি একটা প্যাকেজ হয়ে উঠেছিলেন। যেটা দিয়ে ইংল্যান্ড দলে সেভাবে কখনো অপরিহার্য না হয়েও নিয়মিত খেলে গিয়েছেন। তবে প্যাকেজ হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য দারুণ রবি বোপারা। সেজন্যই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খুঁজে পাওয়া যায় এই অলরাউন্ডারকে।
রবি বোপারাকে চেনেন না এমন ক্রিকেট ভক্ত খুঁজে পাওয়া বোধহয় কঠিন। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে গোটা ক্রিকেট দুনিয়াতেই পরিচিত নাম তিনি। তবে এত পরিচিত রবি বোপারা ঠিক কখনো জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি। তাঁকে নিয়ে ভক্তদের উচ্ছ্বাসও দেখা যায় না। রবি বোপারার পুরো ক্যারিয়ারে তেমন কোন গল্পও নেই। ফলে এত পরিচিত রবি বোপারাকে নিয়ে হঠাৎ করে বলার মত কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতের একটি শিখ পরিবারে জন্ম নেয়া রবি বোপারার পুরো নাম রবীন্দর সিং বোপারা। পুরো পুরিবারই চলে এসেছিল ইংল্যান্ডে। আর সেখানেই ক্রিকেটের পথচলা শুরু তাঁর। ছোটবেলা থেকেই নিজের ক্রিকেট মেধার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছিলেন। ২০০২ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন।
সেই সময় থেকেই ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ ভাবা হতো রবি বোপারাকে। ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও খেলেন। তখন থেকেই ইংল্যান্ড ক্রিকেটের নজরে ছিলেন এই অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ওপেন করতে পারতেন, আবার মিডল অর্ডারেও দারুণ ভাবে ফিট করতেন। এছাড়া তাঁর বোলিংটাই বেশ কার্যকর হয়ে উঠেছিল। সব মিলিয়ে তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।
২০০৬ সালে প্রথম ইংল্যান্ড দলে ডাক পান। তবে অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় আরো এক বছর। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে কেভিন পিটারসনের ইনজুরিতে কপাল খোলে তাঁর। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ডাক পরে তাঁর। যদিও আট নাম্বারে নিজেকে সেভাবে প্রমাণ করতে পারেননি সেই সিরিজে।
তবে সেই বছরই রবি বোপারার ক্যারিয়ায়ের সবচেয়ে বড় ঘটনাটা ঘটলো। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে ডাক পেয়ে গেলেন। মাত্র তিন ওয়ানডে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়েই গেলেন বিশ্বকাপ খেলতে। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে নেমেই বোপারা তাঁর পরিচয় জানান দিলেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৫৩ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে হয়েছিলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
এরপর একটা লম্বা সময় নিয়মিত ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ব্যাটিং, বোলিং মিলিয়ে ছোট খাটো কিছু অবদান থাকতোই। তবে ব্যাট হাতে কিংবা বল হাতে কখনোই খুব দারুণ কিছু করে দেখাতে পারেননি। ফলে এত বছর ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেও কখনো অপরিহার্য হয়ে ওঠেননি।
ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০১৫ সালে। ১৩ টেস্ট, ১২০ ওয়ানডে ও ৩৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই থেমে আছে তাঁর ক্যারিয়ার। ১২০ ওয়ানডে ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মাত্র একবার। ব্যাট হাতে ২৬৯৫ রানের পাশাপাশি বল হাতেও আছে ৪০ টি ওয়ানডে উইকেট।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে আর খেলতে না পারলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এখনো খেলে যাচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং, বোলিং এখনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট। ফলে বিশেষ কোন গল্প না থাকলেও রবি বোপারা নিজেই ক্রিকেট দুনিয়ার এক গল্প হয়ে উঠেছেন।