নাগপুর টেস্টে এক প্রকার অসহায় আত্মসমর্পণই ঘটেছে অজিদের। আশ্বিন, জাদেজাদের স্পিন ঘূর্ণিতে ইনিংস ও ১৩২ রানের বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে তাদের। তারচেয়েও বড় কথা, পাঁচ দিনের টেস্টের সমাপ্তি ঘটেছে মাত্র তিনদিনেই।
দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া আবার এর মধ্যেই এক ধরনের ষড়যন্ত্র খুঁজে নিতে চেয়েছে। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ভারতের স্পিন সহায়ক উইকেটকে। তাদের অভিযোগ, অস্ট্রেলিয়াকে ঠেকাতেই নাকি ভারতের এমন রণকৌশল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার এমন অভিযোগ দিনশেষে কারো কাছেই তেমন ধোপে টিকেনি। কারণ অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে খেলা হলে তা হয়ে যায় পেসারদের জন্য একদম স্বর্গরাজ্য। যা তাদের সবচেয়ে শক্তিমত্তার জায়গা।
সেই হিসেবে এশিয়ার বাইরের দলগুলো এশিয়াতে স্পিন নির্ভর উইকেট ভেবেই খেলতে আসে। অস্ট্রেলিয়াও সেই ব্যাপারটাতে আগে থেকেই অবগত। নয়তো তাদের স্কোয়াডে বাড়তি স্পিনারই বা যুক্ত হবে কেন? তাই অজিদের অভিযোগের প্রত্যুত্তরে এমন নানাবিধ প্রশ্নে অস্ট্রেলিয়ানরাই দিনশেষে জর্জরিত হয়েছে।
তবে সবচেয়ে বড় খোঁচাটা দিয়েছেন নাগপুর টেস্ট জয়ের নায়ক রবীন্দ্র জাদেজা। চোট কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরছেন। আর প্রত্যাবর্তনটাই রাঙিয়েছেন দারুণ অলরাউন্ডার নৈপুণ্যে। তো অস্ট্রেলিয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জাদেজা মজা করে বলেছেন, ‘আমার ধারণা, তারা বিমানে বসেই আমাদের ফাটা পিচ দেখেছিল। মানে এমন একটা পরিবেশ তারা আগে থেকে তৈরি করে রেখেছিল যে, উইকেটে স্পিন ধরলেই অভিযোগের ঝাঁপি খুলতে হবে। কিন্তু উইকেটে এতটাও বল টার্ন করেনি। তারা বেশিরভাগ আউট সোজা বলেই হয়েছে। এমনকি আমরাও সোজা বলেই এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়েছি।’
উইকেট নিয়ে জাদেজা আরো বলেন, ‘দেখুন। আমাদের শক্তির জায়গা স্পিন। পেসাররা দারুণ করছে। কিন্তু স্পিনাররা এখানে ভাল করে বেশি। তাহলে আমরা কেন নিজেদের শক্তি ব্যবহার করবো না? এটা সব দেশ করে। নতুন কোনো বিষয় তো না এটি। স্বাগতিক দেশের শক্তি অনুযায়ীই পিচ তৈরি হয়’।
নাগপুর টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন জাদেজা। ব্যাটে, বলে দুর্দান্ত এ পারফরম্যান্সের কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে তাঁর হাতে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে আবারো মুখোমুখি হবে ভারত আর অস্ট্রেলিয়া। সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এ ম্যাচ জিততেই হবে অজিদের।