আরসিবির নেক্সট দীনেশ কার্তিক

প্রথমে একটি বাউন্ডারি, তারপর একটি ছয় — দারুণ শুরু। মোট আটটি ডেলিভারিতে বোল্টের বিপক্ষে ২৪ রান তুলে নিলেন আরসিবির এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। এমনকি জাসপ্রিত বুমরাহকেও ছাড় দেননি, লং অনে পাঠিয়ে দেন দর্শকসারিতে। ১৯ বলের অপরাজিত ৪০ রানের ইনিংসে ছিল আক্রমণাত্মক ফিনিশারের স্পষ্ট ছাপ।

একদম হুবহু এক। যেন তিনি দীনেশ কার্তিকের ‘লাইক টু লাইক’ রিপ্লেসমেন্ট। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর জার্সিতে যেন ফিরে এলেন দীনেশ কার্তিক। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচের ১৬ তম ওভারে যখন ক্রিজে নামলেন জিতেশ শর্মা, তখন রানের গতি কিছুটা স্তিমিত। কিন্তু নামার পরই বাজ পড়ার মতো আঘাত হানলেন ট্রেন্ট বোল্টের ওপর।

প্রথমে একটি বাউন্ডারি, তারপর একটি ছয় — দারুণ শুরু। মোট আটটি ডেলিভারিতে বোল্টের বিপক্ষে ২৪ রান তুলে নিলেন আরসিবির এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। এমনকি জাসপ্রিত বুমরাহকেও ছাড় দেননি, লং অনে পাঠিয়ে দেন দর্শকসারিতে। ১৯ বলের অপরাজিত ৪০ রানের ইনিংসে ছিল আক্রমণাত্মক ফিনিশারের স্পষ্ট ছাপ।

জিতেশের শটের পরিধি, তার ব্যাট চালানোর স্বাচ্ছন্দতা নজর কেড়েছে আইপিএলে। এক কথায়, তিনি যেন এক বহুমাত্রিক খেলোয়াড়। ২০২২ সালে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন, আর এবার আরসিবি ১১ কোটি রুপিতে তাকে দলে টেনে বুঝিয়ে দিয়েছে—বিশ্বাসের কমতি নেই। তবে এই জিতেশ শর্মাকে গড়ে তোলার নেপথ্যে যিনি রয়েছেন, তিনি আরসিবির সাবেক ফিনিশার দীনেশ কার্তিক। ফিনিশার থেকে ফিনিশারের হাতে উঠল আরসিবির দায়িত্ব — এ যেন উত্তরাধিকার হস্তান্তরের এক গল্প।

গত মৌসুমের পর অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন কার্তিক। এবার কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ব্যাটিং ইউনিটের। অফ-সিজনে জিতেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। জিতেশ বললেন, ‘এটা আমার জন্য অসাধারণ একটা যাত্রা। অফ-সিজনে দিনেশ ভাইয়ের সঙ্গে অনেক খেটেছি। আমি যেসব শট খেলছি, অনেকটাই তার খেলার মতো। উনি আমাকে বলেছিলেন, তুই সার্কেলের চারপাশেই খেলতে পারবি। সেই বিশ্বাসটা থেকেই নিজেকে বদলাতে শুরু করেছি।’

২০২৪ সালের ব্যর্থতার পেছনের কারণ হিসেবে মানসিক অস্থিরতাকেই দায়ী করছেন জিতেশ, ‘গেলবার খেলার মানসিকতা ছিল না, ভবিষ্যতের কথা ভাবছিলাম। দীনেশ ভাই আমাকে বলেছিলেন — এটা তো স্বাভাবিক, রকেট সায়েন্স না। সবারই হয়। ওই কথাগুলো আমাকে ভেতর থেকে হালকা করে দিয়েছে।’

নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার সেই যাত্রায় আত্মবিশ্বাস গঠনের পেছনের কথাটাও বললেন জিতেশ, ‘আমার আত্মবিশ্বাস রান বা স্কোরের উপর নির্ভর করে না। আমার আত্মবিশ্বাস নির্ভর করে প্রক্রিয়ার ওপর। কারণ যদি আমি রানের ওপর বিশ্বাস করি, তাহলে ফলাফল ভেদ করে মানসিক অবস্থাও ওঠানামা করবে। তাই আমি চেষ্টা করি প্র্যাকটিসেই আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে।’

ব্যাট হাতে যেন দীনেশ কার্তিকের প্রতিচ্ছবি। তবে, দীনেশ কার্তিক নন, জিতেশ হতে চান তাঁর নিজের মত। তিনি নিজের মত করে লিখতে চান নিজের গল্প, যে গল্পের অনেকটা জুড়ে থাকবে আরসিবির ফিনিশিং কাব্য।

Share via
Copy link