নেভার স্কোর ফার্স্ট এগেইনস্ট রিয়াল মাদ্রিদ – কথাটাকে ভুল প্রমাণ করেছিল বার্সেলোনা। রিয়ালের মাঠে রিয়ালকেই শুরুতেই গোল দিয়েছিল তাঁরা, এরপর গুণে গুণে আরো তিনবার বল জালে জড়িয়েছে। এল ক্লাসিকোর সেই ভরাডুবি থেকে বের হতে পারেনি লস ব্ল্যাঙ্কোসরা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসি মিলান পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে বার্সা কাণ্ডের।
নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম স্প্যানিশ জায়ান্টদের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতলো মিলান; তাঁদের সমর্থকেরাই হয়তো এত বড় অর্জনের কথা ভাবতে পারেনি। বিশেষ করে শুরুর দুই ম্যাচ হারের পর কে ভাবতে পারবে যে তাঁরা রিয়ালকে হারাবে, সেটাও আবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।
এদিন স্রেফ বারো মিনিটের মাথায় এগিয়ে গিয়েছিল দলটি, ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের কর্নার থেকে হেডে গোলের সূচনা করেন মালিক থিয়াউ। অল হোয়াইটদের সেট পিস ডিফেন্ডিংয়ে দুর্বলতা আরো একবার প্রকাশ পেয়েছিল তখন।
যদিও মিনিট দশেক পর ডি-বক্সে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ট্যাকলের শিকার হলে ম্যাচে ফেরার সুযোগ আসে তাঁদের সামনে। অতঃপর স্পট কিক থেকে দলকে ফেরাতে ভুল হয়নি ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের, তখন মনে হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাতে আরো একটা প্রত্যাবর্তনের কাব্য বোধহয় লিখতে যাচ্ছে তাঁরা।
কিন্তু আলভারো মোরাতা সেই আশায় জল ঠেলে দেন, বিরতিতে যাওয়ার আগে স্বাগতিকদের ছন্নছাড়া ডিফেন্স লাইনের ফায়দা তোলেন। রাফায়েল লিয়াও-র শট আন্দ্রে লুনিন ফিরিয়ে দিলে চলে আসে একেবারে তাঁর সামনে, বাঁধাহীন গোলপোস্টে বল ঠেলে দিয়ে নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে উদযাপনে মাতেন তিনি।
অবশ্য এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও জেতাটা কঠিন ছিল না বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের জন্য। কিন্তু ভাগ্য আর সময় হয়তো চায়নি এমন কিছু। তাই তো ব্রাহিম দিয়াজ, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে বদলি হিসেবে নামিয়েও লাভের লাভ হয়নি। উল্টো পর্তুগিজ উইঙ্গারের বিদ্যুৎ গতির সুবাদে তৃতীয় গোলের স্বাদ পায় ইতালিয়ান প্রতিনিধিরা – শেষদিকে রিয়াল এক গোল শোধ করলেও অফসাইডের কারণে সেটা বাতিল হলে একই থাকে স্কোরবোর্ড।
কার্লো আনচেলত্তি হয়তো হতবুদ্ধি হয়ে আছেন, তাঁর এতদিনের চেনাজানা স্কোয়াড এখন অপরিচিত ঠেকছে। অন্তত রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে আগে কখনোই ঘরের মাঠে পর পর দুই ম্যাচ হারতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু এবার কেবল হারেননি কেবল, বিধ্বস্ত হয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, এই ধ্বংসস্তুপ থেকে কিভাবে উঠে আসে তাঁর শিষ্যরা।