স্রোতের বিপরীতে রিজওয়ান-দৃষ্টান্ত

এশিয়া কাপে নেপালের বিপক্ষে ৪৪, বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ৬৩ – মোহাম্মদ রিজওয়ানের ফর্ম খারাপ যাচ্ছে সেটা বলার কোন সুযোগ নেই। অথচ ভারতের বিপক্ষে পুরো দলই যেখানে ব্যর্থ, সেই ম্যাচের পারফরম্যান্স বিবেচনা করেই শুনতে হয় রিজওয়ান নাকি ওয়ানডেতে চলে না।

অবশ্য সমালোচনায় রিজওয়ানরা দমে যাননা কখনোই; তাঁরা ফিরে আসতে জানেন বারবার। এই যেমন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডু অর ডাই ম্যাচে দলকে একাই টেনে নিয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান – সেই সাথে আরো একবার প্রমাণ করেছেন কেন তাঁকে এতটা ভরসা করে টিম ম্যানেজম্যান্ট।

বৃষ্টিস্নাত ম্যাচ কমতে কমতে এসে ঠেকেছিল ৪২ ওভারে। সেই মেঘলা আবহাওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়েছে শ্রীলঙ্কার পেসাররাও। আগে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে সহজে রান করতে দেয়নি, সেই সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলেছে। একটা পর্যায়ে ১৩০ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তান, হাতে তখন পনেরো ওভারেরও কম।

সেখান থেকে বড় সংগ্রহ গড়ার কাজ শুধু কঠিনই নয়, ভঙ্গুর মিডল অর্ডারের পাকিস্তানের জন্য অসম্ভব ছিল। কঠিন সেই কাজটা অবশ্য অনায়েসে করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, ৭৩ বলে ৮৬ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে দলকে এনে দিয়েছেন ২৫২ রানের পুঁজি। ছয় চারের সাথে দুই ছয় দিয়ে সাজানো এই ইনিংসে রিজওয়ানের স্ট্রাইক রেট ছিল প্রায় ১১৮।

ইফতেখার আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি গড়েছেন ১০৮ রানের দারুণ এক জুটি; যেখানে তাঁর অবদান ৪৩ বলে ৬৪। রান তোলার গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও রিজওয়ান দেখিয়েছেন নিপুণতা। নিজের খেলা শেষ ৩৩ বলে তিনি তুলেছেন ৫৪ রান। পাকিস্তানের ইনিংসে রিজওয়ানের প্রভাব এতটুকুতেই নিশ্চয়ই বোঝার কথা।

২০২১ সালের পর থেকেই রান মেশিনে পরিণত হয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। টি-টোয়েন্টির নাম্বার ওয়ান ব্যাটসম্যানও ছিলেন একটা সময়; তবে ওয়ানডেতে ততটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারেননি, নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়েও ছিলেন না খুশি। কিন্তু সেসব প্রতিকূলতা এড়িয়েই এখন সফল এই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান।

পুরো টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান এখন ১৯৫ রান করা মোহাম্মদ রিজওয়ান; সতীর্থ বাবর আজমের পরেই তাঁর অবস্থান। মিডল অর্ডার নিয়ে পাকিস্তানের সমস্যা বহুদিনের; তাইতো বিশ্বকাপের মত আসরে এমন ইনফর্ম রিজওয়ানকেই চাইবে ভক্ত-সমর্থকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link