ডিগবাজী নয়, সেঞ্চুরি-ই ঋশাভ পান্তের উদযাপন

টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ দিন। ওভারকাস্ট কন্ডিশন। বোলারদের চোখে আগুন। ক্রিস ওকস, জশুয়া টংরা ১৪০ কিমি গতিতে ছুড়ে দিচ্ছেন একের পর এক ইনডাকার, আউটসুইংগার, বাউন্সার। ঋশাভ পান্ত সেই আগুনের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। এক হাতে ব্যাট, আরেক হাতে যেন নিজের একান্ত বিশ্বাস, ক্রিকেট শুধু পরিসংখ্যান নয়, এটা চরিত্রের খেলা।

১৪০ বলে ১১৮ রান। ১৫ চার, ৩ ছক্কা। কিন্তু আশ্চর্যভাবে, সেঞ্চুরির পাগলাটে সেলিব্রেশন নেই। না সেই পরিচিত ডিগবাজি, না পাগলাটে হাঁসি। গাভাস্কার বারবার বললেন, “এই একটা ডিগবাজি তো দে রে পাগল!” পান্ত দিলেন না। আজকের ইনিংসটা হয়তো ছিল নিঃশব্দ বিদ্রোহ।

এক টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি। এটা শুধু রানের গল্প নয়, এটা এক মানসিকতার গল্প। যেখানে ব্যাটিং মানে কেবল রান তোলা নয়, বরং প্রতিপক্ষের ছন্দ ভেঙে দেওয়া, ম্যাচের গতি উল্টে দেওয়া।

এই পান্তই তো ব্রিসবেনে এসে গ্যাবা জয়ের স্ক্রিপ্ট লিখেছিলেন। এই পান্তই ইংল্যান্ডের মাটিতে শতক তুলে নিয়েছিলেন বিপর্যয়ের মাঝে। এই পান্তই দক্ষিণ আফ্রিকায় লড়েছিলেন একার ইনিংস নিয়ে।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পিচ, সবচেয়ে চাপের মুহূর্ত, ঋশাভ পান্ত তখন অন্য কেউ হয়ে ওঠেন। একজন ব্যাটার নয়, একজন নায়ক। যিনি ম্যাচ বাঁচান না, ম্যাচের ভাষা বদলে দেন। এবং ঠিক তখনই প্রশ্নটা আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়, “ঋশাভ পান্ত কি টেস্ট ইতিহাসে এশিয়ার সেরা উইকেটকিপার ব্যাটার?”

ধোনির দাপট ছিল, মুশফিকের স্থায়িত্ব আছে, সাঙ্গাকারার রূপকথা এখনো গর্বের জায়গা। কিন্তু তিনজনের ভেতরেও যে আবেগ, রূপ, বিদ্রোহ, সবটুকু একসঙ্গে খুঁজলে, হয়তো ঋশাভ পান্তকেই খুঁজে পাওয়া যায়।

তিনি নিয়ম মেনে খেলেন না, তবে প্রতিবার সেই নিয়মের ভিত নাড়িয়ে দেন। আজ তিনি ডিগবাজি দেননি। হয়তো এই ইনিংস নিজেই তাঁর সেরা সেলিব্রেশন।

Share via
Copy link