৪৫৪ দিন, প্রায় দেড় বছর – লম্বা একটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে ঋষাভ পান্তের ফেরার জন্য। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ফিরেছেন তিনি, ৪৫৪ দিন পর পা রেখেছেন বাইশ গজে। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠের ছেলে মাঠে নেমেছেন; প্রত্যাবর্তনের দিন ব্যাট হাতে খেলেছেন ১৩ বলে ১৮ রানের ইনিংস।
২০২২ সালের ডিসেম্বর, মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই উইকেটকিপারকে। ভাগ্য গুণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি; তবে হাত পা সহ শরীরের প্রায় প্রতিটা অংশে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন, জীবনে আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবেন কি না সেটা নিয়েও শঙ্কা জেগেছিল।
কিন্তু ব্যাট হাতে লড়াই করা এই তারকা লড়াইয়ের মন্ত্রই আউড়েছেন হাসপাতালের বিছানা শুয়ে শুয়ে। তীব্র মনোবল আর ক্রিকেটে ফেরার দৃঢ়প্রতিজ্ঞার জোরে প্রত্যাশার চেয়ে ভাল গতিতে সুস্থতার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। একটা সময় পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন, তখনো কিন্তু নিশ্চিত ছিল না আদৌ তাঁকে আর মাঠে দেখা যাবে কি না।
অবশ্য এই বাঁ-হাতি সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন তুড়িতে, নিজের চেষ্টা আর ক্রিকেট বোর্ডের পূর্ণ সমর্থনে ভর করে পুরনো পরিচয়ে আবির্ভূত হয়েছেন তিনি। দিল্লি ক্যাপিটালসও ভরসা রেখেছিল তাঁর উপর, তাই তো লম্বা সময় পরে ফিরলেও অধিনায়কত্বের ভার তাঁকে দিতে এক মুহুর্ত ভাবেনি দলটির ম্যানেজম্যান্ট।
পাঞ্জাবের বিপক্ষে তাই টস করতে এসেছিলেন পান্ত, পেয়েছেন প্রতিপক্ষ অধিনায়কের উষ্ণ অভ্যর্থনা। এরপর ব্যাট হাতে চার নম্বরে নেমেছিলেন তিনি; ছিল না কোন জড়তা, ভয় পাওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না।
নিজের মত করেই খেলেছেন এই ব্যাটার; কাট শট, কভার ড্রাইভ দেখা গিয়েছিল তাঁর কাছ থেকে। দুই চারে ১৮ রান করার পর র্যাম্প শট খেলতে গিয়ে আউট হন তিনি – যদিও আউটের ভয় ভুলে এমন উদ্ভট শট খেলাই তো বাকিদের চেয়ে আলাদা করেছে তাঁকে।
ঋষাভ পান্ত বড় রান করতে পারেননি, পরিসংখ্যানের বিচারে তাই প্রত্যাবর্তনকে রঙিন বলার সুযোগ নেই। তবে কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থক যে মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় ছিল তাঁদের সেটি উপহার দিয়েছেন তিনি; সেই সাথে বুঝিয়ে দিয়েছেন যেখানে থেমেছিলেন, ঠিক সেখান থেকেই আবার শুরু করতে যাচ্ছেন নিজের পথ চলা।