দুই ম্যাচে ছয় উইকেট, রিশাদ হোসেন রীতিমত উড়ছেন। ঘরের মাঠের সকল অবজ্ঞার জবাব তিনি দিচ্ছেন যেন ভিনদেশে। প্রতিটা মুহূর্তে তিনি নিজের উন্নতির ছাপ ফেলে যাচ্ছেন। লেগ স্পিনারদের কদর হয় না যে তল্লাটে, সেখান থেকে তিনি মাথা উঁচু করে জানান দিচ্ছেন নিজের অস্তিত্ব। করতে চাইছেন বিশ্বের বুকে রাজত্ব।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনও দেখা যায় লেগ স্পিনাররা বসে আছেন সাইডবেঞ্চে। এমন কতশত দিন তো রিশাদও পার করেছেন। ঘরের মাঠের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেও রিশাদকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে নিজের সুযোগের। হুট করে প্রত্যাশার চাপ বাড়িয়ে, তাকে দেওয়া সেই সুযোগ গুলো তিনি কখনো কাজে লাগিয়েছেন, কখনো বা ব্যর্থ হয়েছেন।
তবে তিনি প্রতিবারই শিখেছেন। উপেক্ষার দিনগুলোকে নিজেকে গড়ার জ্বালানি হিসেবে ব্যয় করেছেন। আর সেই ফল রিশাদ পাচ্ছেন এখন এসে। দেশের গণ্ডি ছাপিয়ে বিদেশের এক ভিন্ন লিগে রিশাদ দেখাচ্ছেন নিজের মুন্সিয়ানা। নিজের অভিষেক ম্যাচেই রেখেছিলেন বুদ্ধির পরিচয়। ব্যতিক্রম ঘটেনি করাচি কিংসের বিপক্ষে নিজের খেলা দ্বিতীয় ম্যাচে।
এদিন প্রথম ওভারেই দুই খানা উইকেট শিকার করেন রিশাদ হোসেন। শান মাসুদের রিভার্স সুইপের পরিকল্পনায় পানি ঢেলে উইকেট তুলে নেন রিশাদ। এ ক্ষেত্রে অবশ্য লাহোর কালান্দার্সের উইকেটরক্ষক স্যাম বিলিংসও প্রশংসা প্রাপ্য।
প্রথম দুই ওভারে বাংলাদেশি এই লেগ স্পিনার কৃপণতার অনন্য নিদর্শন সৃষ্টি করেন। ভীষণ চাপে ফেলে দেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। দ্বিতীয় ওভারে তিন রান খরচায় তুলে নেন আরও একটি উইকেট। দুই ওভার শেষে চার রানের বিনিময়ে রিশাদ তিন উইকেটের মালিক। ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্যও চলে এসেছে লাহোর কালান্দার্সের হাতের মুঠোয়।
এরপর অবশ্য খানিকটা ছন্দ হারিয়ে রান হজম করেছেন আরও ২২টি। দিনশেশে ২৬ রানে তার উইকেট সংখ্যা তিনটি। অভিষেক ম্যাচের পরই লাহোর কালান্দার্স জানিয়েছিল, রিশাদ তাদের বোলিং ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে। সেই আস্থার প্রতিদান তিনি দিয়ে দিলেন ঠিক তার পরের ম্যাচেই।
রিশাদের এই অবাধ বিচরণ মুগ্ধতার শীতল দোলা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এখন নিশ্চয়ই চোখ খুলবে বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্তাদের, নাকি তারা ঘুমিয়ে পড়েন আগেভাগেই?