আর কতবার রিশাদকে প্রমাণ করতে হবে!

নিজের জায়গা দখল করে নিতে হয়। অনেক অপেক্ষার পর পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে হয়। সবাইকে দ্বিধায় ফেলে দিতে হয়- এতদিন যা হয়েছে তা বেজায় ভুল। এসবকিছুই করেছেন রিশাদ হোসেন। তিনি প্রমাণ করেছেন সাইডবেঞ্চ অন্তত তার জন্যে নয়। তিনি ঠিক কতটা কার্য্যকর সেই প্রমাণ রাখলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে।

এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দলের অষ্টম ম্যাচে এসে সুযোগ মিলল রিশাদ হোসেনের। ব্যাট করবার সুযোগটা মেলেনি তার। দলের টপ অর্ডার যে চালিয়েছে ধ্বংসলীলা। সতীর্থদের ব্যাটিং তাণ্ডবে একটু খানি হলেও যে স্বস্তি পেয়েছেন রিশাদরা। স্কোরবোর্ডে ছিল ২৩৯ রান। সেটাই বরং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলারদের।

রিশাদ সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়েছেন। নিজের সেরাটাই উপহার দিয়েছেন। চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে দাঁড়িয়ে তিনি শিকার করেছেন চার-চারটি উইকেট। জশ ব্রাউনের উইকেট দিয়ে শুরু। শেষটায় প্রতিপক্ষ অধিনায়কে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন রিশাদ।

স্বাভাবিকভাবেই রানের চাপ ছিল চট্টগ্রামের চ্যালেঞ্জার্সের ব্যাটারদের উপর। তবুও ২৪০ রানের টার্গেটের শুরুটা নিজেদের পক্ষে ছিল চট্টগ্রামের। কিন্তু দুই ওভারের মাঝে তাদের সকল পরিকল্পনা চুরমার করে দেন রিশাদ। ইনিংসের নবম ওভারে বল হাতে আক্রমণে আসেন রিশাদ। প্রথম ওভারে প্যাভিলিয়নে ফেরান জশ ব্রাউনকে।

মিডউইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে সজোরে ব্যাট চালিয়েছিলেন ব্রাউন। তবে রিশাদের ঘূর্ণিতে বল ঠিকঠাক লাগেনি ব্যাটে। তাতে করে আউটসাইড এডজ হয়ে বল উঠে যায় আকাশ পানে। পয়েন্ট অঞ্চলে সে ক্যাচ লুফে নেন তাওহীদ হৃদয়।

এরপর ইনিংসের ১১ তম ওভারে আবারও বল হাতে রিশাদ। এই ওভারে তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ। তাতে করেই চট্টগ্রামের ২৪০ রান তাড়া করার স্বপ্ন ফিঁকে হতে শুরু করে। লং অনে ক্যাচ দেন টম ব্রুস। শাহাদাত হোসেন দীপু ক্যাচ তুলে দেন শর্ট ফাইন লেগে। এই দুই উইকেটেও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন।

ব্রুস ডাউন দ্য উইকেটে এসে লফটেড শট খেলার প্রচেষ্টা করেছেন। তা আন্দাজ করতে পেরে রিশাদ লেন্থ কিছুটা খাটো করে দেন। তাতেই লং অনে ক্যাচ তুলে দেন ব্রুস। অন্যদিকে শাহাদাত দীপু স্কুপ শটও যেন আগে থেকেই অনুমান করেছিলেন রিশাদ। সেই বলেও দিয়েছেন ফ্লাইট। ত্রিশ গজ বৃত্তের মাঝেই আটক দীপু।

এরপর শুভাগত হোমও পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন রিশাদের বলে। রিভার্স সুইপ শটটা ঠিকঠাক খেলতে ব্যর্থ হন চট্টগ্রামের অধিনায়ক। আর তাতেই চতুর্থ উইকেট জমা হয় রিশাদের নামের পাশে। এদিন বল হাতে খুব বেশি খরুচেও ছিলেন না ডানহাতি এই লেগ স্পিনার।

চার ওভারে স্রেফ ৫.৫০ ইকোনমি রেটে ২২ রান দিয়েছেন রিশাদ। দারুণ দক্ষতারই পরিচয় দিয়েছেন তিনি। লেগ স্পিনারদের যেই অভাব, সেই অভাবটা পূরণের পথে এগিয়েই যাচ্ছেন রিশাদ হোসেন। এখন স্রেফ তার প্রয়োজন নিয়ম করে খেলার সুযোগ। তা পাওয়ার দাবী তিনি জানিয়ে গেলেন আরও একবার। রিশাদকে ভরসা করে নিশ্চয়ই সেই সুযোগটি দিতে চাইবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link