হারারে টেস্টের তৃতীয় দিন শেষেই টেস্ট থেকে অবসরের ইঙ্গিত দিয়ে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু অবসরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বিবৃতি দেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বা এই ব্যাটসম্যান। তবে আজ পঞ্চম দিনে মাঠে নামার আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায়ের বার্তাই যেন দিয়ে রাখলেন মাহমুদউল্লাহ।
আজ অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে গার্ড অব অনার দিয়েছে সতীর্থরা। ফলে আর বলে না দিলেও চলে যে এটাই তাঁর শেষ টেস্ট। অথচ, এই টেস্ট দিয়েই প্রায় দেড় বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই টেস্ট দিয়েই সাদা পোশাকে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। প্রত্যাবর্তনে দলের বিপর্যয়ে খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। অপরাজিত ছিলেন ১৫০ রান করে।
হারারে টেস্টের তৃতীয় দিন সকালে টিম মিটিংয়ে টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মাহমুদউল্লাহ।বোঝাই যাচ্ছে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আরো বেশি মনোযোগী হতেই তিনি টেস্টকে বিদায় বলার কথা ভাবছেন। হয়তো, পিঠের পুরনো ইনজুরিটাও এর একটা কারণ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও জানিয়েছেন, মাহমুদউল্লাহ টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।
আর তাঁরই যেন আনুষ্ঠানিকতা হল হারারের পঞ্চম দিন সকালে। দারুণ এক সম্মাননা পেলেন সতীর্থদের কাছ থেকে। আজই টেস্টে রিয়াদের শেষ দিন। তবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি চালিয়ে যাবেন তিনি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এখনো দলের অপরিহার্য অংশ অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্বও মাহমুদউল্লাহর কাধে।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে টেস্টে অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহর। এরপর দেশের হয়ে খেলেছেন ৫০ টি টেস্ট ম্যাচ। এই ৫০ ম্যাচের ৯৪ ইনিংসে ৩৩.১১ গড়ে ২৯১৪ রান সংগ্রহ করেছেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্টে ১৬ টি হাফ সেঞ্চুরির সাথে পাঁচটি সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর।
টেস্টে বল হাতেও মোটামুটি সফল ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ৫০ টেস্টে ৬৫ ইনিংস বল করে ৪৫.৩৩ গড়ে ৪৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট পেয়ে ছিলেন এক বার। ম্যাচ সেরা বোলিং ফিগার ১১০ রান দিয়ে ৮ উইকেট শিকার।
১৯৭ ওয়ানডেতে ৩৫ গড়ে ৭৭.১৭ স্টাইকরেটে ৪৪১০ রান সংগ্রহ করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ওয়ানডেতে ২৫ টি হাফ সেঞ্চুরির সাথে রয়েছে ৩ টি সেঞ্চুরি। তিনটি সেঞ্চুরির দুটি ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ও একটি ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ওয়ানডেতে ৫.১৭ ইকোনমিতে ৪৭.৩ গড়ে ৭৬ টি উইকেটও রয়েছে তাঁর।
৮৯ টি-টোয়েন্টিতে ২৩.৯ গড়ে ১২৩.১৪ স্টাইক রেটে ১৫০৬ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। কোন সেঞ্চুরি না থাকলেও রয়েছে চারটি হাফ সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টিতে বল হাতে ৩১ টি উইকেট পেয়েছেন তিনি।
সনাথ জয়াসুরিয়া, শোয়েব মালিক বা স্টিভেন স্মিথের মত কালক্রমে পুরোদস্তর ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছেন তিনি। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে তাঁর চেয়ে বেশি রান করতে পেরেছেন আর মাত্র পাঁচজন – তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মুমিনুল হক ও হাবিবুল বাশার সুমন।