আগের দিনের ছক্কাটা আরেকটু ব্যাটে বলে হলেই হয়তো নতুন ইতিহাস গড়া হয়ে যেত। টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর সুযোগ তো আর রোজ রোজ আসে না। সেই আক্ষেপ বুকে নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আর এবার আর কোনো আক্ষেপ রাখলেন না তিনি। ব্যাটে কিংবা বলে – দুই জায়গাতেই ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। বয়সটা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই করলেও ক্রিকেটের প্রতি তাঁর এই ভালবাসা, দলের প্রতি তাঁর এই নিবেদন সত্যিই অনবদ্য।
১৩ তম ওভারে ক্রিজে আসেন। দলের অবস্থা তখন যে খুব ভাল সেটা বড় গলায় বলার উপায় নেই। আগের দুই ম্যাচের ‘স্টারবয়’ তাওহীদ হৃদয় ফিরে গেছেন সাজঘরে।
সেখান থেকে বাংলাদেশের ইনিংস দু’দিকেই যেতে পারত। হয় ভাল, নয় হয় খারাপ। সেটা অন্তত খারাপ হয়নি রিয়াদ আর সাকিব আল হাসানের জুটির সুবাদে। ৩২ বলের জুটিতে ৪১ রান যোগ করেন তাঁরা। এর মধ্যে রিয়াদই ছিলেন বেশি সরব। ২১ বলে ২৫ রান করেন তিনি। ইনিংসে ছিল দুটি চার ও দু’টি ছক্কা।
সেখান থেকে শেষ তিন ওভারে সাকিব আর জাকের আলীর জন্য ঝড় তোলাটা সহজ ছিল। সেটা তাঁরা করতে পেরেছেন। কিংসটাউনে নেদারল্যান্ডসের সামনে বাংলাদেশ দল ১৬০ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিতে পেরেছে।
তবে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ভূমিকাটা সেখানে শেষ হয়ে যায়নি। তিনি আরও বড় একটা কাজ করে গেছেন বোলিং করতে এসে। হ্যাঁ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ইদানিং আর বোলিং করেন না। তবে, এবার পুরো বিশ্বকাপজুড়েই দলের প্রয়োজনে এক-দুই ওভার বোলিং করে যাচ্ছেন।
দশম ওভারে বোলিংয়ে এসে তিনি সাজ ঘরে ফিরিয়ে দেন ভারতীয় বংশদ্ভুত বিক্রমজিৎ সিংকে। স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন টপ অর্ডারের এই ব্যাটার। ১৬ বলে ২৬ রান করেন বিক্রম। নেদারল্যান্ডসের ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেটই সবচেয়ে বেশি ছিল।
খোদ সাকিব আল হাসানের একই ওভারে দুই ছক্কা হাকান তিনি। ফলে, তিনি উইকেটে টিকে গেলে ডাচদের জয়ের সম্ভাবনা নি:সন্দেহে বাড়ত। রিয়াদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে সেটা আর সম্ভব হয়নি। এমন নিবেদনের জন্যই বাংলাদেশ দলে অনন্য তিনি!