সৃষ্টিকর্তার কাছে মাথা নত করছেন। যেকোন অর্জনে শেজদাহে লুটিয়ে পড়ছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এমন দৃশ্যের সাথে আপনি নিশ্চয়ই পরিচিত। বহুবার দেখেছেন এমন দৃশ্য। দুই হাত আকাশ পানে তুলে দিয়ে নিজের সাফল্যের কৃতজ্ঞতাও করেছেন তিনি। ব্যাট হাতে তার সাফল্যের কীর্তির উদাহরণ তো আর কম নেই।
বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে রীতিমত ঈর্ষণীয় পারফরমেন্স করে যাচ্ছেন তিনি। প্রায় ৫০ গড়ে প্রতিনিয়ত রান করে যাচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রায় শত ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও অর্জন করে ফেলেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাইতো তিনিই পাকিস্তানের সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে স্ট্রাইকরেট মুখ্য বিষয় হিসেবে সামনে আসে প্রতিবার। ধুন্ধুমার ব্যাটিং প্রদর্শনীর সাথে অবশ্য রিজওয়ানের সামঞ্জস্যতা নেই। তিনি বরং একটু পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। পাকিস্তান দলের চাহিদাও অবশ্য সেটি। দলের হাল ধরবার কাজটা করতে হয় তাকে। নিজের ইনিংসটিকে করতে হয় বড়।
দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ ছাড়াও বিশ্বকাপে দলের চাহিদা মেটাতে বহুবার সক্ষম হয়েছেন রিজওয়ান। গেল দুই বিশ্বকাপে পাকিস্তান একবার ফাইনাল খেলেছে, একবার খেলেছে সেমিফাইনাল। সেই দুইটি বিশ্বকাপে দলের সদস্য ছিলেন রিজওয়ান। স্রেফ সদস্য ছিলেন বললে ভুল বলা হয়। তিনি ছিলেন পারফর্মারদের একজন। তার ব্যাটে ভর করেই এগিয়েছিল পাকিস্তান।
২০২১ ও ২০২২ এই দুই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই খেলেছেন রিজওয়ান তার ক্যারিয়ারে। এই সময়ে ১৩টি ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ৪১.৪৫ গড়ে রান করেছেন। দুইটি ম্যাচে ছিলেন অপরাজিত। ৪টি অর্ধ-শতকের সাথে তার নামের পাশে যুক্ত আছে ৪৫৬ রান। ছক্কা খুব একটা হাঁকাননি তিনি। বরং প্রয়োজন মাফিক চার আদায় করেছেন। ছক্কার সংখ্যা ১৫টি অন্যদিকে, ৩৪টি বাউন্ডারি এসেছে তার ব্যাট থেকে।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে তার অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংসটি নিশ্চয়ই মনে আছে। তার দৃঢ়তা থেকেই তো অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বাবর আজম। তারা দুইজনে মিলে ভারতকে হারিয়েছিলেন ১০ উইকেট ব্যবধানে।
ঠিক এতটা গুরুত্বপূর্ণ এক চরিত্র মোহাম্মদ রিজওয়ান। কত ম্যাচ যে পাকিস্তান জিতেছে রিজওয়ানের কল্যাণে সে হিসেব কষতে বসলে দিন পার হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই তিনি দলের জয়ে অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তানকে টেনে তুলেছেন। নিয়ে গেছেন স্বস্তি-দায়ক কোন এক অবস্থানে।
সেই কাজটি এ দফাও করতে হবে ডান-হাতি এই ব্যাটারকে। আরও একটিবার বিশ্ব জয়ের স্বপ্নে বিভোর পাকিস্তান। সাম্প্রতিক বিশ্বকাপগুলোর পারফরমেন্স তাদের প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু সেই শিরোপা ছোঁয়ার রাস্তায় রিজওয়ানকেই দিতে হবে নেতৃত্ব। রিজওয়ান পারবেন তো?