সম্ভবত ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ। ভারত-পাকিস্তান মহারণের মাঝে বারংবার বৃষ্টি এসে দিয়েছে বাঁধা। তাতে করে যেন একদিকে হয়েছে মনোযোগের ঘাটতি, অন্যদিকে পোক্ত হয়েছে পরিকল্পনা। মনোযোগের ঘাটতিতে রোহিত শর্মা বিলিয়েছেন উইকেট। শাহীন শাহ আফ্রিদি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে এনে দিয়েছেন আনন্দের উপলক্ষ।
ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয়না, সেটা বেশ পুরনো তথ্য। এই দুই দলের দেখা হয় বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টেই। এমন সব বৈশ্বিক আসরে ৭ বার শাহীন শাহ আফ্রিদির মুখোমুখি হয়েছেন রোহিত শর্মা। সেই সাত দেখায় ৪বারই শাহীনের উইকেট পরিণত হয়েছের ভারতের কাপ্তান।
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোহিতকে চতুর্থবারের মত নিজের উইকেটে পরিণত করলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। তাও একেবারে নিখাঁদ এক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে। রোহিতের জন্যে ফাঁদ পেতেছিলেন আফ্রিদি। সেই ফাঁদেই মুখ থুবড়ে পড়েছেন ভারতের মারকুটে ব্যাটার।
ওভার দ্য উইকেট থেকে শাহীনের ছোড়া ফুলার লেন্থের বল। সেসব বলে ইনসুইং আদায় করতে পারেন তিনি ডানহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে। রোহিতকে তেমন একটি বলেই আউট করবার পরিকল্পনার ছক এঁকেছিলেন শাহীন। তবে ব্যাটারটা যে রোহিত, তার জন্যে তো বাড়তি সতর্কতাও অবলম্বন করতে হয়। ঠিক সে কারণেই সুইং না হওয়ার বলের জন্যে স্কোয়ার লেগের বাউন্ডারিতেও রেখেছিলেন ফিল্ডার।
শেষ অবধি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের কাছেই ক্যাচ দিয়েছেন রোহিত। কিন্তু এর আগের তিন বলও যে উইকেট পাওয়া বলটার মতই ছিল সমান গুরুত্বপূর্ণ। রোহিতকে প্রায় দ্বিধায় রেখেছিলেন শাহীন। রোহিত জানতেন, ফুলার লেন্থের ইনসুইং ডেলিভারি আসতে চলেছে। কিন্তু সেটা কখন, তা ছিল রোহিতের অজানা।
তৃতীয় ওভারে শাহীনের তিনটা বলই অফ স্ট্যাম্প চ্যানেল ধরে উইকেটের পেছনে গিয়ে থেমেছে। এর মধ্যে একটি বলে ব্যাটের খোঁচাও লেগেছিল, কিন্তু বল স্লিপ অবধি পৌঁছায়নি। টানা তিন বলই প্রায় একই রকমভাবে করলেন শাহীন। চতুর্থ বলটায় ছুড়ে দিলেন নিজের সেই ‘দো ধারি তালওয়ার’।
ইনসুইং হলে বলটা আঘাত করত প্যাডে, তাতে লেগ বিফোর হয়ে আউট হতেন রোহিত। প্রথম ওভারেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল, তবে সে যাত্রায় ইনসাইড এডজ হওয়ায় বেঁচে যান ভারতের অধিনায়ক। কিন্তু এদফা আর বাঁচতে পারলেন না। বলটায় সুইং হয়নি। পিকআপ শট খেললেন। মাঠের বড়দিকের বাউন্ডারির দিকে বল হাওয়ায় ভেসে এগিয়ে যেতে থাকে। শেষ অবধি হারিস রউফ ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি।
এভাবেই পরিকল্পনার ফাঁদে ফেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শাহীন এই নিয়ে দুইবার আউট করেছেন রোহিতকে। তাছাড়া সব ধরণের ফরম্যাট মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ ধুকেছেন রোহিত। মারকুটে এই ব্যাটার স্রেফ ৬০ রান নিতে পেরেছেন ৭২ বল খেলে। স্ট্রাইকরেট ছিল মাত্র ৮৩.৩৩। শাহীনের বিপক্ষে ৫০ বলেই কোন রান নিতে পারেননি রোহিত। তাইতো বলাই যায় শাহীনের ‘বানি’ রোহিত।