ভারতের আরও একটি বিব্রতকর পরাজয়। দর্শক মহলে প্রশ্ন উঠছে- রোহিত শর্মার নেতৃত্বই কি সমস্যা? অধিনায়ক হিসেবে তার পরিসংখ্যান যে ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এক অন্ধকার সময়ের আভাস দিচ্ছে।
১৯৮০ সালের পর থেকে অন্তত ১০টি টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে রোহিতের পরাজয়ের হার সর্বোচ্চ, ৩৬.৩৬ শতাংশ। ২২টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৮টিতে পরাজয় তার ব্যর্থতা স্পষ্ট করছে। ভারতের অধিনায়কত্ব সবসময় ছিল কিংবদন্তিদের হাতেই।
পরিসংখ্যান বলছে মহেন্দ্র সিং ধোনি ৬০ ম্যাচ কাপ্তানি করে হেরেছিলেন মাত্র ৩০ শতাংশ ম্যাচ। মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলিদের হারের শতাংশ তো আরও কম। সেই তুলনায় রোহিত কি বড্ড খারাপই করছেন কি-না, সেই প্রশ্ন কিন্তু এখন যৌক্তিক অনেকটাই।
সাফল্যের মাপকাঠিতে রোহিতের এই পরিসংখ্যান, সাম্প্রতিক রেকর্ড প্রশ্ন তুলছে তার নেতৃত্ব দক্ষতা নিয়ে। ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম এক কালো অধ্যায়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় দল জাসপ্রিত বুমরাহের নেতৃত্ব।
পার্থে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম ম্যাচটি নিজেদের করে নেয় ভারত। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে রোহিত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই ভাগ্য বদল। অ্যাডিলেডে মাত্র তিন দিনের মধ্যে ১০ উইকেটের বড় পরাজয় ভারতের। এ যেন জয়-পরাজয়ের মাঝের সূক্ষ্ম রেখায় নেতৃত্বের অসামঞ্জস্যের দৃষ্টান্ত।
রোহিতের ব্যাটিং ফর্মও দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নবিদ্ধ। অধিনায়ক হিসেবে চাপ তার ব্যাটিং পারফরম্যান্সে সরাসরি প্রভাব ফেলছে কি? কিংবা দলের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে তার নেতৃত্বের কৌশল? ভারতের মতো ক্রিকেট-আবেগপ্রবণ দেশে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া জরুরি।
গাঙ্গুলির নেতৃত্বে ভারতীয় দল যেভাবে একটি আক্রমণাত্মক মানসিকতা তৈরি করেছিল, রোহিতের নেতৃত্ব যেন সেই মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছে। ধোনির শীতল নেতৃত্ব, আজহারের অভিজ্ঞ কৌশল কিংবা কুম্বলের দৃঢ় মানসিকতা—রোহিত কোথাও যেন সেই উচ্চতায় পৌঁছাতে পারছেন না।
তবে, ক্রিকেট মানে শুধুই পরিসংখ্যান নয়। এটি একটি আবেগের খেলা, যেখানে অধিনায়কের ভূমিকা দলকে জয়ের জন্য উজ্জীবিত করা। রোহিত কি সেই স্পার্ক হারিয়ে ফেলেছেন? নাকি এটি শুধু সময়ের প্রশ্ন? ভারতের ক্রিকেট ভক্তরা আশায় বুক বেঁধে রয়েছে—সমস্যার সমাধান আসবেই।