ত্রিমুখী লড়াইয়ের শ্রেষ্ঠত্ব রোহিতের

বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ছিল একটা লড়াই। বিরাট কোহলি, বাবর আজম ও রোহিত শর্মার মধ্যে ছিল সেই লড়াই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের সেই লড়াইতে রোহিত মাত দিয়েছেন বাকিদের। প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে এবারের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে বাকিদের ব্যর্থতা ও রোহিতের আগুনে ব্যাটিং।

রোহিত বরারবই আগ্রসী। তিনি চান দলকে এনে দিতে একটা উড়ন্ত সূচনা। এবারের বিশ্বকাপেও তেমনটি করে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। যার অন্যতম উদাহরণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা তার ৯১ রানের ইনিংস। এই ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে বিরাট কোহলিকে টপকে ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন তিনি।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভিরাট কোহলির ৪১০৩ রানের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। ম্যাচে মাত্র ৫ বল মোকাবিলা করে শূন্য রানে আউট হন ভিরাট। ফলে তাঁকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কাজটা সহজেই করে ফেলেন রোহিত শর্মা। অবশ্য গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই বিরাট কোহলি বড্ড ছন্নছাড়া। নিজের ছায়া হয়েই বিরাজমান তিনি। বলার মত কোন পারফরমেন্স করতে পারেননি।

একই দশা রোহিতের আরেক প্রতিদ্বন্দীর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসর বাবর আজম ছিল নিষ্প্রভ। তাতে করে কপাল পুড়েছে পাকিস্তানেরও। যদিও বাবরের স্ট্রাইকরেট নিয়ে সর্বদাই অভিযোগ ছিল। এবারও অব্যাহত ছিল সেই ধারা। তাতে করে রোহিতের কাছে হারাতে হয়েছে সিংহাসন।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের তালিকাতে প্রথম স্থান দখল করেন রোহিত শর্মা। পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের ৪১৪৫ রানকে পিছনে ফেলে শীর্ষ রান সংগ্রাহক এখন রোহিত শর্মা। এখন পর্যন্ত ১৪৯টি আন্তর্জাতিক ইনিংসে ৪১৬৫ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। ১৪০.৭৫ স্ট্রাইক রেটে এই রান করেছেন রোহিত।

এখানেই সম্ভবত ক্রিকেট শেখায় জীবনের মানে। আপনি পিছিয়ে পড়বেন, তো আরেকজন এগিয়ে যাবে। তবে রোহিত স্রেফ নিজে একা এগিয়ে যাচ্ছেন না। দলকে সাথে নিয়েই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দীরা নিজেরা যেমন ছিটকে যাচ্ছেন দৌড় থেকে, তেমনি দলও প্রভাবিত হচ্ছে তাদের পারফরমেন্সে।

যদিও রোহিতের সহযাত্রী হয়ে বিরাট হয়ত খানিকটা অস্বস্তি এড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু বাবরকে সইতে হচ্ছে অসহ্য যন্ত্রনা। দল যে প্রথম রাউন্ডেই ধরেছে বাড়ির পথ। তাতে করে সমালোচনার বিষাক্ত তীর তাকে আঘাত করছে প্রতিনিয়ত।

তবুও এই তিন কিংবদন্তির এই লড়াইটা উপভোগ করবার মত। তাদের মধ্যকার এই অদৃশ্য লড়াইটা ক্রিকেটের উন্মাদনাই বাড়াচ্ছে। শেষ অবধি এই লড়াই কে জয়ী হবে, তা হয়ত সময়ই বলে দেবে। তবে তাতে যদি দলের উপকার না হয়, তাহলে সম্ভবত সবই বৃথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link