আফগানিস্তানের রুপকথার রাতে, জো রুটের প্রত্যাবর্তন হয়ে রইল মলিন এক আলোকচিত্র। ১৭ তম সেঞ্চুরিতে তিনি আফগানিস্তানের জয়ের ভাগ্য কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন বটে। কিন্তু আর পারলেন কই? ইব্রাহিম জাদরানের অতিমানবীয় তান্ডবের পর, আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের উইকেটের ঝঙ্কার। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ইংল্যান্ডের বিদায়।
সাড়ে পাঁচ বছর পর সেঞ্চুরি করলেন জো রুট। দিনের হিসেবে প্রায় ২০৮৪ দিন পর তিনি ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন ওই গগন পানে। গ্রীষ্ম কাটিয়ে বরফ পড়েছে লন্ডনের রাস্তায়। পাতা ঝড়া বসন্তও কেটে গেছে পাঁচ খানা। অবশেষে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রুটের ব্যাটে ওয়ানডে শতকের ছোঁয়া। কিন্তু সেসব যে সবই অনর্থক।
ইংল্যান্ডের বাঁচা-মরার ম্যাচ। ইংল্যান্ডকে কবরেই ঠেলে দিল আফগানিস্তান। সেই কবরের মাথার সামনে স্রেফ এক বটবৃক্ষ হয়ে রইলেন রুট। বটবৃক্ষের মত শান্ত, দৃঢ় তবুও প্রচণ্ড ভয়ংকর। রাত পোহালেই কেমন এক গা ছমছমে আবহ। সেই আবহই তিনি সৃষ্টি করেছিলেন স্বপ্নবাজ আফগানদের মনে। কিন্তু শেষ অবধি ভয়কে জয় করেছে হাসমতউল্লাহ শাহিদীর দল।
জয় যে পেতেই হতো তাদের। ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে থেকেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে যারা, তারা তো আর সহজে হার মানতে চায় না। রুটকে তাই পোড়াতে হল বহু কাঠখড়। ৩৪ বছর বয়সী রুটের পায়ের পেশিও জবাব দিয়ে দিতে চাইল। কিন্তু অদম্য রুট তবুও এগিয়ে যেতে চাইলেন।
এমন সব ইনিংসের জন্যেই তো রুটকে আরও একটি আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলার নিমন্ত্রণ দিয়েছিল ইংল্যান্ড। তিনি কথা রেখেছেন। কিন্তু তার দল দেয়নি তাকে সঙ্গ। এক একাকী সেনানি হয়ে তিনি লড়াই চালিয়ে গেছেন একটা প্রান্ত থেকে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৫১ করেও পরাজয় এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল। সেই ক্ষতকে আরও বিক্ষত করে দিল আফগানরা। রুট নিরাময়ের শত চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ।
ওয়ানডে ধাঁচের ব্যাটিং করেছেন তিনি ১০৮ স্ট্রাইকরেটে। ১১১ বলে ১২০ রান এসেছে জো রুটের ব্যাট থেকে। কিন্তু এসব কিছুই রুটের কাছে অর্থহীন। তিনি যে ম্যাচটা জিতিয়ে ফিরতে পারেননি। ওমরজাইয়ের উইকেটে পরিণত হয়ে তিনি হতাশার নোনা জলে ভাসিয়েছেন ইংল্যান্ডকে। শিরোপার দাবিদার দলটার তাই হল অকাল বিদায়।