প্রযুক্তি নাকি সিদ্ধান্তকে নিখুঁত করে! তবে সেই প্রযুক্তিই যদি ভুল করে? কিংবা চোখের সামনে যা পরিষ্কার, সেটাকে অস্বীকার করে? ক্রিকেট বিশ্ব সম্প্রতি দেখলো এমনই এক প্রযুক্তির ব্যর্থতা, যার শিকার ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ব্যাটার রস্টন চেজ।
তবে প্রযুক্তির এই ব্যর্থতা নতুন কিছু নয়। ২০২৪-২৫ সালে অনুষ্ঠিত বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেও দেখা গিয়েছিল এমন ভুল। সেখানে অবশ্য টেকনোলজির সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত।
খোলা চোখে দেখা গিয়েছিল বল গ্লাভস ছুঁয়ে যাওয়ার পর গতিপথ পরিবর্তন করেছে, কিন্তু স্নিকো মিটারে দেখা যায় বলের সঙ্গে কিছুই লাগেনি। থার্ড আম্পায়ার সৈকত প্রযুক্তিকে তোয়াক্কা না করে খালি চোখে দেখা সিদ্ধান্তের উপর আস্থা রেখে ব্যাটারকে আউট দেন—মেলবোর্ন টেস্টে যশস্বী জয়সওয়ালের আউট পরবর্তীতে বিতর্কের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সেই ঘটনা যেন আবারও ফিরে এলো ব্রিজটাউন টেস্টে, যদিও প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্যাট কামিন্সের এক দুর্দান্ত ইনসুইংগারে এলবিডব্লিউ হন ৪৪ রান করে ক্রিজে থাকা রস্টন চেজ। অনফিল্ড আম্পায়ার দ্রুত আঙুল তুললেও ব্যাটার আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বল ব্যাটে লেগেছে।
সাথেসাথেই রিভিউ নেন চেজ। রিপ্লেতে দেখা যায়—প্যাডে লাগার আগে বল স্পষ্টভাবে ব্যাটে লেগেছে, এমনকি ডিফ্লেকশনও ছিল। তবে স্নিকো মিটার বললো—কোনো স্পর্শ হয়নি! দৃশ্যমান সত্যকে উপেক্ষা করে তৃতীয় আম্পায়ার প্রযুক্তির উপর ভরসা রেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন।
চোখের সামনে যা স্পষ্ট, প্রযুক্তি সেটা অস্বীকার করলো—আর আম্পায়ারও সেটা মানলেন! বিস্মিত হলো ফিল্ডিং দল, হতবাক ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ তো সরাসরি বললেন এই সিদ্ধান্ত মানার মতো নয়।
প্রযুক্তির ব্যবহার সবকিছু সহজ করে দিয়েছে, তবে সেটি যে ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকতের প্রযুক্তি স্রোতে গা না ভাসানো সিদ্ধান্তটা তাই আজও একটা দৃষ্টান্ত দাঁড় করিয়ে রাখে! তবে রস্টন চেজের প্রযুক্তির বলি হওয়াটা দিনশেষে ক্রিকেটকেই তো ক্ষতিগ্রস্ত করে!