শচীনরা রোজ রোজ জন্মায় না!

ভারতের ক্রিকেটে কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান কম আসেনি। কিংবা এই উপমহাদেশ থেকেও তো কত গ্রেটরা উইলোর কারুকাজ দেখিয়েছেন। তবে একটা নাম সেই তালিকায় একেবারেই ভিন্ন, যিনি ছাপিয়ে গিয়েছিলেন সবকিছুই। যিনি ব্যাট হাতে নামলে থমকে যেত গোটা ভারত। এখনো ভারতের অলিতে গলিতে ব্যাট নিয়ে ছুটে চলা ছেলেটা শচীন টেন্ডুলকার হতে চায়।

সেঞ্চুরিটা করেই একটা ট্রেডমার্ক উদযাপন। ব্যাটটা একটু উঁচিয়ে, আকাশ পানে চেয়ে অনেকটা নীরব এক উদযাপনই বটে। আকাশের দিকে তাকিয়ে আসলে নিজের বাবাকেই স্মরণ করতেন শচীন টেন্ডুলকার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই কাজটা যিনি করে দেখিয়েছেন ঠিক একশো বার। ক্রিকেট ইতিহাসে যে কীর্তি শুধু ওই একজনেরই। যিনি পাল্টে দিয়েছিলেন উপমহাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিটাকেই।

ভারতের ক্রিকেটে কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান কম আসেনি। কিংবা এই উপমহাদেশ থেকেও তো কত গ্রেটরা উইলোর কারুকাজ দেখিয়েছেন। তবে একটা নাম সেই তালিকায় একেবারেই ভিন্ন, যিনি ছাপিয়ে গিয়েছিলেন সবকিছুই। যিনি ব্যাট হাতে নামলে থমকে যেত গোটা ভারত। এখনো ভারতের অলিতে গলিতে ব্যাট নিয়ে ছুটে চলা ছেলেটা শচীন টেন্ডুলকার হতে চায়।

তবে শচীন টেন্ডুলকার কী চাইলেই হওয়া যায় ? চাইলেই কী তাঁর মত রাজত্ব করা যায়? আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় দুই যুগের ক্যারিয়ার। এতটা সময় ধরে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এভাবে খেলে যেতে কী আর কেউ পারবে? হয়তো আপনি বলতে পারেন শচীনের মত ক্রিকেট প্রতিভা নিয়েই বা কজন জন্মায়।

সেটা ঠিক, ব্যাট হাতে এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা নিয়ে তিনি জন্মেছিলেন। তবে সেই প্রতিভার সর্বোচ্চ ব্যবহার কী করে করতে হয় সেটাও শচীন দেখিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর চেয়েও প্রতিভাবান ক্রিকেটার নিশ্চয়ই পৃথিবীতে এসেছেন। তবে তাঁরা শচীন টেন্ডুলকার হতে পারেননি।

যেমন ভারতের ক্রিকেটে কিংবদন্তি কোচ রমাকান্ত আচরেকার। যার হাত ধরেই উঠে এসেছেন শচীন টেন্ডুলকার, বিনোদ কাম্বলিরা। শিবাজি পার্কের সেই মাঠেই শচীনদের সাথে অনুশীলন করতেন অনিল গুরাভ। যিনি ছিলেন কোচ রমাকান্ত আচরেকারের প্রিয় ছাত্র। এমনকি শচীনকেও বলতেন অনিল গুরাভের মত ব্যাটিং করার চেষ্টা করতে।

অনিল গুরাভ হারিয়ে গিয়েছিলেন ওই শিবাজি পার্কের মাঠ থেকেই। অথচ শচীন টেন্ডুলকার নিজেকে তুলে এনেছিলেন কিংবদন্তিদের কাতারে। কেননা পুরোটা জীবন একটা শৃঙ্খলা ও কঠিন পরিশ্রমে বেঁধে ফেলেছিলেন নিজেকে। নিজের জীবনের সেরা সময়টা দিয়েছেন ক্রিকেটকে, আর ক্রিকেটও তাঁকে দুহাত ভরেই ফিরিয়ে দিয়েছে।

মাত্র সতেরো বছর বয়সেই ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দিয়েছিলেন। যদিও তাঁর ক্রিকেট যাত্রাটা শুরু হয়েছিল আরো অনেক আগে থেকেই। সেই ছোট বয়স থেকেই প্রতিদিন একই রুটিন মেনে গিয়েছেন। ভোর থেকে শুরু করেছেন ব্যাট হাতে লড়াই। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যাটিং করে গিয়েছেন।

শোনা যায়, সারাদিন এমন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যখন বাড়ি ফিরতেন তখন নাকি ঘুমে ঢুলে পড়তেন। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর থেকেই তারকা খ্যাতি তাঁর পিছু নিয়েছে। ভারতের ক্রিকেট মানেই হয়ে উঠেছিল শচীন টেন্ডুলকার। এতকিছুও তাঁকে তাঁর ক্রিকেট প্রেম থেকে আলাদা করতে পারেনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেই ২৪ টা বছর খেলেছেন তখনো সেই একই শৃঙ্খল জীবন। ব্যাট হাতেও সেই একইরকম পরিশ্রম। ব্যাট হাতে অমন অমানবিক পরিশ্রম বিশ্ব ক্রিকেটে ক’জনই বা করতে পেরেছে। শচীন টেন্ডুলকার পেরেছিলেন বলেই তিনি ওই জায়গাটায় পৌঁছাতে পেরেছিলেন।

এই কাজটা সবাই করতে পারে না বলেই শচীনের চেয়ে বেশি প্রতিভা নিয়েও কেউ এই জায়গাটায় আসতে পারে না যেমন এই মুহূর্তে উপমহাদেশের ক্রিকেটে কী এমন কেউ আছেন যিনি এই জীবনটা যাপন করতে পারবেন। দিনভর শুধু ক্রিকেটকেই সময় দিতে পারবেন। যিনি শচীনকে ছুঁয়ে দেখার দু:সাহস দেখাতে পারবেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...