সাইফের টাইফয়েড: অভিষেকের অপেক্ষায় নাঈম-জয়!

এমনিতেই বেশ চাপের মধ্যে ছিলেন ওপেনার সাইফ হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটে তাঁকে নিয়ে দোলাচলটাই যেনো এখন সবচেয়ে বেশি। টি-টোয়েন্টি দলে হঠাত করে ডাক পেলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। যে ফরম্যাটটা নিয়মিত খেলছেন সেই টেস্টে ব্যর্থ সাইফ। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ ছিল সাইফ হাসানের সামনে।

হঠাৎ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে মাঠ থেকেই বাইরে থাকতে হচ্ছে এই ওপেনারকে। এর অর্থ হল নতুন একজন ওপেনার দেখা যেতে পারে বাংলাদেশের একাদশে। সেটা হতে পারে মাহমুদুল হাসান জয় কিংবা মোহাম্মদ নাঈম শেখ। যদিও, টেম্পারমেন্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিজ্ঞতার বিচারে এগিয়ে থাকবেন জয়।

গতকাল রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর টাইফয়েড পরীক্ষা করা হয় বলে জানা যায়। টাইফয়েডের ফলও এসেছে পজিটিভ। টাইফয়েডের কারণে শারীরিক ভাবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। এই অবস্থায় মাঠে নামাও সম্ভব না। তাই সুস্থ হতে বেশ কিছুদিন বিশ্রামেই থাকতে হবে এই ওপেনারকে। ফলে পাকিস্তানে বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে সাইফ যে খেলতে পারছেন না তা মোটামুটি নিশ্চিত।

বিষয়টি খেলা ৭১-কে নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা ওর (সাইফ হাসান) টাইফয়েড পরীক্ষা করেছিলাম। সেখানে ওর রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে। তবে দুশ্চিন্তার তেমন কোন কারণ নেই। এখন আমরা তাঁকে এন্টিবায়োটিক দিচ্ছি। ফলে দ্রুতই সুস্থ হয়ে ওঠার কথা।’

ওদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগে হাতে সময় আছে আর মাত্র তিন দিন। ফলে এত দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারবে কিনা সেই প্রশ্ন করলে দেবাশীষ জানান, ‘টাইফয়েড থেকে সেরে উঠতে মোটামুটি সপ্তাহখানেক লেগে যাওয়ার কথা। ফলে দ্বিতীয় টেস্ট খেলাটা কঠিন। এছাড়া দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে খানিকটা সময় লাগবে। এই সময়টায় বিশ্রামে থাকাই ভালো।’

টাইফয়েড আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি সাইফ হাসানকে। শুধুমাত্র টেস্ট করেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দেবাশীষ জানান, ‘আমরা শুধু টেস্ট করতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন সাইফ দলের সাথে হোটেলেই আছে। এখন ওর হাসপাতালে থাকাটা জরুরি না। বিশ্রাম নিলেই সেরে উঠবে আশা করা যায়।’

ওদিকে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য পরিকল্পনায় থাকলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে হঠাত করেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে ডাকা হয়েছিল এই ওপেনারকে। তবে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই হয়েছেন ব্যর্থ। এরপর চট্টগ্রাম টেস্টেও রানে ফিরতে পারেননি। দুই ইনিংসে রান করেছেন যথাক্রমে ১৪ ও ১৮। ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে রানে ফেরার সুযোগ থাকলেও এখন আর সেটি সম্ভব হচ্ছেনা।

ওদিকে ঢাকা টেস্টের জন্য ২০ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। সেখানে নতুন করে ডাকা হয়েছে নাঈম শেখকে। টি-টোয়োন্টি ক্রিকেটে নিয়মিত ওপেন করলেও টেস্ট ক্রিকেটে এখনো অভিষেক হয়নি নাঈমের। ফলে সাইফের জায়গায় দ্বিতীয় টেস্টে তিনিও ওপেন করতে পারেন। এছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম বারের মত জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়।

প্রথম টেস্টের আগে অধিনায়ক মুমিনুল জানিয়েছিলেন জয়কে তাঁরা ওপেনার হিসেবেই দেখছেন। যদিও বয়সভিত্তিক দলে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেছেন জয়। তবে দ্বিতীয় টেস্টে সাইফ হাসানের জায়গায় জয়ের অভিষেক হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।

তবে, একটা বিকল্প ভাবনাও আছে। একাদশে নতুন করে কোনো ওপেনার না নিয়ে সাদমান ইসলামের সাথে ওপেন করতে নামতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সেক্ষেত্রে সাকিব আল হাসানকে একাদশে রাখার জন্য কোনো ব্যাটসম্যানও সরাতে হচ্ছে না।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link