সৈকতকে সিদ্ধান্তে হারানো অসম্ভব

তিনি হয়ে উঠছেন দেশীয় আম্পায়ারদের আদর্শ। কোন কোন ক্ষেত্রে বিশ্ব ক্রিকেটেরই আদর্শ হয়ে উঠছেন বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলনা ইবনে শহীদ সৈকত।

বোলারের জোরাল আবেদন, আম্পায়ার নাকচ করে দিলেন। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন রিভিউ নিয়ে নিলেন। কিন্তু তিনি সম্ভবত ভুলে গিয়েছিলেন আম্পায়ারের স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। তিনি তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের সুচারু সিদ্ধান্তের জন্যে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন প্রতি নিয়ত।

রিভিউ নিয়ে তার বিপক্ষে যে সফল হওয়া প্রায় অসম্ভব। এবারও হল তাই। রিভিউ শেষে সৈকতের দেওয়া নট আউট সিদ্ধান্তই বলবৎ রইলো। তাকে এবারও আর হারানো গেল না। আলিস আল ইসলামের মিডল স্ট্যাম্পে পিচ করা বলটা লেগ স্ট্যাম্প ছাড়িয়ে বেড়িয়ে গেল। আফিফ হোসেন ধ্রুব এ যাত্রায় বেঁচে গেলেন।

বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে আম্পায়ারের ভূমিকায় ছিলেন সৈকত। রীতিমত অস্ট্রেলিয়া কাঁপিয়ে তিনি ফিরেছেন দেশের মাটিতে। বেশ কিছু সূক্ষ্ম সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে পুরো ক্রিকেট পাড়ায় সমালোচনা হয়েছে, আলোচনাও হয়েছে, প্রশংসাও কুড়িয়েছেন বাংলাদেশি আম্পায়ার।

লম্বা সে সফর কাটিয়ে তিনি দেশে ফিরেছেন। নেমে গেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ পরিচালনায়। আর সে ম্যাচেই আবারও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। ম্যাচের একেবারে শুরুর দিকে আরেক আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান শরণাপন্ন হন সৈকতের।

কেননা উসমান খানের ব্যাটের আলতো টোকায় বল গিয়ে জমা হয় মাহিদুল অঙ্কনের দস্তানায়। মাহফুজুর রহমান ক্যাচ নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না। তবে খুলনা টাইগার্সের খেলোয়াড়রা শতভাগ নিশ্চিত ছিলেন। তাইতো সৈকতের পরামর্শে প্রথম আম্পায়ার থার্ড আম্পায়ারের কাছে রিভিউয়ের আবেদন করেন। উসমান খান ফেরেন প্যাভিলিয়নে।

মাঠের ক্রিকেটে সৈকত এখন তাই হয়ে উঠেছেন অন্যতম প্রধান চরিত্র। তাকে ঘিরে আগ্রহের কমতি নেই। মাঠে তিনি কি করছেন তার প্রতি সকলের রয়েছে তীক্ষ্ম নজর। সমালোচকরা তো রীতিমত তীর্থের কাকের মত ভুলের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু সৈকত তাদের জন্যে ভাত ছেটাচ্ছেন না। বরং নিজের উচ্চতা ক্রমশ ধরা ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশের আম্পায়ারদের দক্ষতা নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই। সেসবের মাঝে সৈকত একটা নতুন দ্বার উন্মোচন করছেন প্রতি মুহূর্তে। তিনি হয়ে উঠছেন দেশীয় আম্পায়ারদের আদর্শ। কোন কোন ক্ষেত্রে বিশ্ব ক্রিকেটেরই আদর্শ হয়ে উঠছেন বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলনা ইবনে শহীদ সৈকত।

Share via
Copy link