পাক ক্রিকেটে সাজিদ -নোমানের স্পিন বিপ্লব

নোমানের বয়স ৩৮, সাজিদের বয়স ৩১। অথচ দুইজনের টেস্ট অভিষেক হয়েছে ২০২১ সালে। কারো ঝুলিতেই নেই ২০ টা টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তবে কি এদিন শুধু শুধু সময় নষ্ট করল পাকিস্তান!

সাজিদ খান ও নোমান আলী – কেউই সময়ের সেরা স্পিনার নন। তবে, নিজেদের মাটিতে এক সাথে দু’জন যখন আক্রমণে আসেন – তখন নিশ্চয়ই তাঁদের থেকে সেরা কেউ আর হতেই পারেননা। এবারও সেই একই ভাবে তাঁরা শেষ করে দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন আপ।

পাকিস্তানের মাটি, পেসারদের ঘাটি। এটিই যেন এক অলিখিত নিয়ম ছিল চিরকাল। কিন্তু সেই পাকিস্তানেই দুই স্পিনার নিজেদের স্পিন ঘূর্ণিতে কাবু করছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। সাজিদ খান আর নোমান আলী রীতিমতো স্পিন বিপ্লব চালাচ্ছেন পাক ক্রিকেটে। তাদেরকে কেন্দ্র করেই আজকাল পিচ তৈরি করছে পাকিস্তান। এমন ধারা বজায় থাকলে অদূর ভবিষ্যতেই পেসারদের রাজ্যে স্পিন রাজত্ব দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব।

পাকিস্তানের মাটিতে এই দুইজনের বোলিং যেন দুর্ভেদ্য মায়াজাল। যার গোলকধাধায় পরাস্ত হচ্ছে প্রতিপক্ষের সব ব্যাটার। ২০২১ সালের পরে টানা তিন বছর ঘরের মাঠে একটা টেস্ট ও না জেতা পাকিস্তানের হাল ধরেন এই দুইজন। শেষ দুই টেস্টে প্রতিপক্ষ ৪০ উইকেটের মধ্যে ৩৯ উইকেট নিলেন এই দুই স্পিন জুটি। ৯ বছর পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জেতে পাকিস্তান।

এবার ঘরের মাঠে স্পিন বিষে বশ করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের মোটে ২৩০ রানের পূঁজিকেই পাহাড়সম করে তুললেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের কাছে। নোমানের পাঁচ আর সাজিদের চার উইকেটে মাত্র ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তান ও পেয়ে যায় ৯৩ রানের লিড।

ইনিংসের শুরুতেই মিকাওল লুইসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে উইকেট উৎসব শুরু করেন সাজিদ আলি। পরের বলেই ক্যেসি কার্টিকে শর্ট লেগে ক্যাচের ফাঁদে ফেলে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেন তিনি। ওভার দুয়েক পরেই একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তিন বলের ব্যবধানে ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে বোল্ড এবং কাভেম হজকে নিজেই ক্যাচ ধরে সাজঘরে ফিরিয়ে ক্যারিবিয়ানদের টপ অর্ডারকে ধুলোয় মিশিয়ে দেন সাজিদ।

এরপরেই দৃশ্যপটে হাজির নোমান আলি। পরের পাঁচ উইকেট একাই তুলে নিয়ে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন নোমান। আলিক আথানজে, জাস্টিন গ্রেভাস, টেভিন ইমলাচ, কেভিন সিনক্লেয়ার, গুদাকেশ মতি কেওই কিছু বুঝে উঠার আগেই নোমানের স্পিন ছোবলে কাবু হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। দুইজনকে এলবিডব্লু, দুইজনকে বোল্ড, বাকি একজনকে বধ করেছেন ক্যাচ আউটে।

নোমানের বয়স ৩৮, সাজিদের বয়স ৩১। অথচ দুইজনের টেস্ট অভিষেক হয়েছে ২০২১ সালে। কারো ঝুলিতেই নেই ২০ টা টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তবে কি এদিন শুধু শুধু সময় নষ্ট করল পাকিস্তান!

Share via
Copy link