পাওয়ারপ্লেতে মরিচের ঝাঁজ, নাম তার ফিল সল্ট!

পাওয়ারপ্লেতে রানের পেছনে ছুটতে থাকা দলগুলোর মাঝে সল্ট এখন দারুণ ছন্দে। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচ পর্যন্ত পাওয়ার প্লে-তে করেছেন ১৮২ রান, স্ট্রাইকরেট ১৯৩.৬১ — লিগের এই সময়ে তার ছক্কার সংখ্যাও আকাশচুম্বি - ১১ টি।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ধারাবাহিকতার সবচেয়ে বড় কারণ একটাই—স্থিতিশীলতা। এই দলের প্রতিটা খেলোয়াড় জানে তার কাজটা কী। টুর্নামেন্ট শুরুর পর থেকেই যেন তারা পেয়েছে নিজেদের নিখুঁত কম্বিনেশন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৩ জন খেলোয়াড় ব্যবহার করেছে তারা। শুধু কন্ডিশন বুঝে মাঝে মধ্যে রাশিক সালাম আর সুয়াশ শর্মাকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এই নিলামে ফাফ ডু প্লেসিসের জায়গায় ১১.৫০ কোটি রুপিতে আনা ফিল সল্টকে ঘিরে অনেক প্রশ্ন ছিল। কিন্তু, তিনি সব উত্তর দিয়েছেন ব্যাট হাতে। পাওয়ারপ্লেতে রানের পেছনে ছুটতে থাকা দলগুলোর মাঝে সল্ট এখন দারুণ ছন্দে। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচ পর্যন্ত পাওয়ার প্লে-তে করেছেন ১৮২ রান, স্ট্রাইকরেট ১৯৩.৬১ — লিগের এই সময়ে তার ছক্কার সংখ্যাও আকাশচুম্বি – ১১ টি।

রাজস্থান সর্বশেষ ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে পাওয়ারপ্লেতে তুলেছিল মাত্র ৪৫ রান, এই মৌসুমে তাদের সবচেয়ে কম। উইকেট ছিল অন্যরকম, বল মাঝে মাঝে নিচু হয়ে আসছিল। এমন কন্ডিশনে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার মতো লেগস্পিনার হয়ে উঠতে পারতেন ত্রাস। কিন্তু, তার আগেই ম্যাচটা যেন একাই শেষ করে দেন ফিল সল্ট।

প্রথম ওভারে বল হাতে ছিলেন জোফরা আর্চার, দারুণ শেপে আছেন। সল্টের বিপক্ষে তিনি সাফল্য পেতেই পারতেন প্রথম ওভারে, পাননি স্রেফ ভাগ্যের ফাঁদে। পাওয়ার প্লের  প্রথম ওভারের পরিসংখ্যান দেখলে সল্টের প্রভাবটা আসলে বোঝা যাবে না। ২৭ বল খেলে করেছেন ৩০ রান, স্ট্রাইকরেট ১১১.১১ — সাধারণ দেখালেও এর ভিতরে লুকিয়ে আছে আগ্রাসনের গল্প। প্রথম ওভারে তিনি ৮২.৭ শতাংশ ডেলিভারিতেই ছিলেন আগ্রাসী। পুরা আসরে যেটা ৫৩.৮ শতাংশ।

ম্যাচের আগে পাওয়ারপ্লেতে তার রানগুলোর ৫৭.৫ শতাংশই এসেছিল অফসাইড থেকে, পেসারদের বিপক্ষে সেটা ৫৯.৪ শতাংশ — সল্টের আইপিএল যাত্রা শুরুর পর থেকে এখানে শুধু শিখর ধাওয়ানই তার চেয়ে এগিয়ে। এই তথ্য কাজে লাগিয়ে সল্টকে আটকে রাখতে চেয়েছিল রাজস্থান। স্কয়ার লেগ আর লং-অন অঞ্চলে ফিল্ডার বসিয়ে, প্রথম ওভারে ২.৫৫ ডিগ্রি সুইং করিয়ে আর্চার বল রেখেছিলেন সল্টকে শরীরের কাছে।

কিন্তু সল্ট থেমে থাকার পাত্র নন। তিনি ক্রিজে দাঁড়িয়ে পড়লেন লেগ স্টাম্পের বাইরে, খুঁজে নিলেন লেগ সাইডের ফাঁকা অঞ্চলগুলো। আর্চারকে মারলেন তিনটা বাউন্ডারি। এরপর সন্দীপ শর্মা যখন বল করতে এলেন, গতি কমিয়ে দিলেন। সল্ট তখন নিজেকে অফ স্টাম্পের বাইরে নিয়ে গেলেন —  খুলে দিলেন অফসাইডের দুয়ার। কখনও সোজা খেললেন, আবার কখনও স্কয়ার লেগে টেনে মারলেন।

যেখানে রাজস্থান পাওয়ারপ্লে শেষে দাঁড়িয়ে ছিল ৪৫/০, সেখানে আরসিবি তখন ৬৫/০। এগিয়ে ২০ রান। সেই মুহূর্তেই যেন ম্যাচটা শেষ। ম্যাচের রাশ নিজের হাতে নেওয়ার সুযোগই পেলেন না হাসারাঙ্গা। সাঞ্জু স্যামসন ম্যাচ শেষে বলেছিলেন—সেই পাওয়ারপ্লেইতেই হেরে যায় রাজস্থান। আর ফিল সল্টের ব্যাটেই সেই হারের শুরু।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link