সামির রিজভী, ঝিনুকে লুকিয়ে থাকা মূল্যবান রত্ম

নিজেকে প্রমাণ করতে পারার এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে রিজভী নিশ্চয়ই ফিরবেন বিধ্বংসী এক ব্যাটার হয়ে। এটাই কি তবে সামির রিজভীর ব্রেকআউট ইনিংস? 

রশিদ খানকে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু সামির রিজভীর। তরুণ তুর্কি হিসেবে বেশ নামডাক। কিন্তু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে সেই অর্থে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। নিজের প্রথম আইপিএল মৌসুম কাটিয়েছেন ভীষণ বাজেভাবে। এরপর দ্বিতীয় মৌসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসেও সুবিধা করতে পারছিলেন না। কিন্তু শেষ বেলায় একটা স্ফুলিঙ্গ ঠিকই জ্বালিয়ে রাখলেন সামির রিজভী।

তাকে রীতিমত আট কোটি চল্লিশ লাখ রুপিতে দলে ভিড়িয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। অভিষেক মৌসুমেই প্রায় আকাশচুম্বী দর উঠে যায় তার। কিন্তু পারফরমেন্সের বেহাল দশায় তার আর ঠাই হয়নি চেন্নাইয়ের ঘরে। দিল্লি ক্যাপিটালস ভিত্তিমূল্যের খানিক বেশি দামের বিনিময়ে তাকে দলে নেয়। কিন্তু তাদের হয়েও তিনি একেবারেই ছিলেন নিষ্প্রভ।

চার ম্যাচ খেলে মোট মিলিয়ে ৬৩ রান নিতে পেরেছিলেন। কিন্তু শুধু শুধু কি এই ছেলের পেছনে প্রায় সাড়ে আট কোটি রুপি খরচ করবে চেন্নাই! আবার ব্যর্থ হওয়ার পর কেনই বা দিল্লি তাকে কিনে নেবে ৯৫ লাখ রুপিতে! ঝিনুকের খোলসে যে লুকিয়ে আছে বহু মূল্যবান রত্ম। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে তার খেলা ইনিংসটি অন্তত দেখিয়ে দিল সেই মুক্তোর কিঞ্চিৎ ঝলক।

কোন সমীকরণ নেই, স্রেফ নিয়মের খাতিরে খেলতে নেমেছে দুই দল। এমন ম্যাচেও ২০০ ছাড়ানো লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে পাঞ্জাব। সেই লক্ষ্য তাড়া করে জয় পেতে চেয়েছে দিল্লি। মৌসুমের শেষ বেলা এক চিলতে সুখস্মৃতি। সেই স্মৃতি সৃষ্টিতে শিল্পী হয়ে এলেন সামির রিজভী।

২৩২ স্ট্রাইকরেটের একটা ইনিংস খেললেন তিনি। নানা সমীকরণের মারপ্যাঁচে যখন কঠিন হয়ে যাচ্ছিল পরিস্থিতি, সেই মুহূর্তে তার হাঁকানো পাঁচটি ছক্কা দিল্লিকে দিয়েছে স্বস্তি। আরও তিন খানা চারের সমন্বয়ে সামির তুলে নিলেন নিজের আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি।

শেষ অবধি অপরাজিত থেকে, দলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। চেন্নাইয়ের আট কোটি রুপি জলে গেলেও, দিল্লির ৯৫ লাখ রুপি একেবারেই জলে যায়নি। স্বদেশী ক্রিকেটার হিসেবে তাকে চাইলেই ধরে রাখতে পারে দিল্লি। নিজেকে প্রমাণ করতে পারার এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে রিজভী নিশ্চয়ই ফিরবেন বিধ্বংসী এক ব্যাটার হয়ে।

প্রীতি জিনতাকে বিষাদগ্রস্ত করে দেওয়া একটা ইনিংস খেললেন সামির রিজভী। তবে তার শিবিরে নিঃসন্দেহে বয়ে গেছে আনন্দের খরস্রোতা নদী। এটাই কি তবে সামির রিজভীর ব্রেকআউট ইনিংস?

 

Share via
Copy link