হুট করেই যখন আপনি পথ হারান, অকস্মাৎ যখন বিপদ ঘাড়ের পেছনে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে তখন আপনার প্রয়োজন হয় একজন ত্রাণকর্তার। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে পাকিস্তানেরও এমন একজনকে বড্ড দরকার ছিল, আর ঠিক সময়েই কাঙ্ক্ষিত ত্রাণকর্তা হয়ে পর্দায় আবির্ভূত হয়েছেন শাদাব খান, খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া দলকে টেনে তুলেছেন চালকের আসনে।
তিনি অবশ্য দলের নিয়মিত ব্যাটারদের কেউ নন; মূলত লেগ স্পিনার, টুকটাক ব্যাটিং জানেন। ইদানিং বল হাতে ফর্মে নেই, একাদশে তাই জায়গা পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। তবু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তেই চওড়া হয়ে উঠেছে তাঁর ব্যাট, বিপর্যয়ের বিপরীতে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
বাকিদের ব্যর্থতার দিনে ২৫ বলে ৪০ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছেন এই ডান-হাতি। এক চারের পাশাপাশি তিন ছয়ে সাজানো ইনিংসটি প্রাণ ফিরিয়েছে ম্যাচে; বাবর আজমের সঙ্গে তাঁর ৭২ রানের জুটিই মূলত লজ্জা থেকে রক্ষা করেছে পাকিস্তানকে। পিএসএলের ফর্ম বিবেচনায় তাঁকে পাঁচ নম্বরে খেলানোর সিদ্ধান্ত যৌক্তিক প্রমাণ হলো বটে।
মোহাম্মদ রিজওয়ান, উসমান খান, ফখর জামান – শাদাব যখন বাইশ গজে আসেন তখন তিনজনই সাজঘরে ফিরে গিয়েছেন, অথচ স্কোরবোর্ডে তখন স্রেফ ২৬ রান! অন্যপ্রান্তে বাবরও টিকে থাকার সংগ্রাম করছিলেন; কিন্তু তিনি নিজে অনড় ছিলেন, শুরুতে রয়ে সয়ে খেলে এরপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন মার্কিন বোলারদের ওপর।
জেসি সিংকে পরপর দুই ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানি দর্শকদের প্রথম আনন্দের উপলক্ষ এনে দিয়েছিলেন এই তারকা। যদিও এরপর আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি তিনি, সুইপ খেলতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ফিল্ডারের হাতে।
দুর্দান্ত সূচনা পেয়েও বড় রান করতে না পারার আক্ষেপ তাই থাকার কথা তাঁর মনে। তবে যা করেছেন সেটা ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই, অন্তত ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় এমন ব্যাটিংয়ের জন্য বড়সড় ধন্যবাদ দিতেই হয় তাঁকে।