চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে – শাহীন শাহ আফ্রিদির জন্য প্রচলিত প্রবাদটি বড্ড মানানসই। কেননা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানের বাদ পড়া নিশ্চিত হওয়ার পরেই পুরোদমে জ্বলে উঠেছেন তিনি। টুর্নামেন্টে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে রীতিমতো আগুন ঝরিয়েছিলেন বল হাতে, আর সেই আগুনে জ্বলে পুড়ে ভস্ম হয়েছে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই বাড়তি প্রত্যাশা ছিল এই পেসারকে ঘিরে; এমনকি এবারের আসরের সেরা বোলার হবেন এমনটা ছিল অনেকের ধারণা। কিন্তু প্রথম তিন ম্যাচ খেলে মোটে দুই উইকেট যোগ হয়েছিল তাঁর ঝুলিতে। যদিও হতাশাময় বিশ্বকাপের শেষটা ভালোভাবেই করেছেন তিনি।
এদিন আইরিশদের বিপক্ষে চার ওভার হাত ঘুরিয়েছেন এই বাঁ-হাতি, এসময় ২৩ রান খরচ করার বিনিময়ে তিন ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নের পথে ফেরত পাঠান। সুইং আর সিম মুভমেন্টের যে-ই প্রদর্শনী তিনি দেখিয়েছেন সেটির বিপরীতে কোন জবাব জানা ছিল প্রতিপক্ষ টপ অর্ডারের।
নিজের প্রথম ওভারেই স্কোরবোর্ডে নাম তুলেছিলেন শাহীন, দুর্দান্ত এক ইনসুইংয়ে ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড করেছেন অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে। এক বল পরে আবারো উদযাপনের উপলক্ষ সৃষ্টি করেন তিনি, এবার আউটসুইংয়ের ফাঁদে ফেলেন লরকান টকারকে। মাত্র দুই রানের বিনিময়ে সেই ওভারে দুই উইকেটের পতন ঘটে, তাতেই ব্যাকফুটে চলে যায় আয়ারল্যান্ড।
ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে অবশ্য দলটির আরেক ব্যাটিং ভরসা হ্যারি টেক্টরকে আউট করেন এই পাক বোলার। যদিও এতে ভাগ্যর সহায়তা ছিল মুখ্য; আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত এবং ব্যাটার রিভিউ না নেয়ার সুবাদে এলবিডব্লু হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন টেক্টর – যদিও এক্ষেত্রে বোলিংয়ের কৃতিত্বকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তাঁর দারুণ বোলিংয়ের কারণেই রিভিউ নেয়ার আত্মবিশ্বাস পাননি ব্যাটার।
চলতি বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে খেলার কথা ছিল শাহীন শাহর, কিন্তু টিম ম্যানেজম্যান্টের কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি। এর প্রভাব মাঠের খেলায় পড়েছে সেটা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। তবে পুরো আসর জুড়ে তাঁর ছন্দহীন পারফরম্যান্সের প্রভাব নিঃসন্দেহে দলের উপর পড়েছে, শেষ ম্যাচে তাই তাঁকে জ্বলে উঠতে দেখে কেবল আক্ষেপ বেড়েছে সমর্থকদের।