যত গর্জে তত বর্ষে না, মাঠের বাইরে যত হুঙ্কার তোলেন না কেন – মাঠের খেলায় লবডঙ্কা। বলেছিলেন, ‘আপনাদের চেয়ে আমরা হয়তো একটু বেশি জানি, কোন উইকেটে কোন শট খেলতে হবে।’ নি:সন্দেহে প্রজ্ঞাবান নাজমুল হোসেন শান্তরা সাধারণ দর্শক কিংবা সাংবাদিকদের থেকে বেশি জানেন কোন শট কখন খেলতে হয়। যার ধ্যান-জ্ঞান শুধুই ক্রিকেট তার শট সিলেকশন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকাই তো স্বাভাবিক।
কিন্তু, প্রতিপক্ষের ফাঁদে বারংবার পা না দেওয়াও নিশ্চয়ই তাদের জানা উচিত। কথায় তিনি যতই জ্ঞানী হউন না কেন, মাঠের খেলায় তিনি একেবারেই প্রজ্ঞা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন বারবার।
একটা কমন প্র্যাকটিস রয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে। যখনই তারা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যান, তখনই ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করে আড়াল করতে চেয়েছেন নিজেদের বাজে সময়। সেটা মুশফিকুর রহিমের আয়না কাহিনী, কিংবা লিটন দাসের ২৫ গড় ভাল কাণ্ডর মধ্যে দিয়ে বহু আগেই প্রমাণিত হয়েছে।
২০২৪ সালে ঘরের মাঠে চলমান মিরপুর টেস্ট সহ পাঁচটি টেস্ট খেলেছেন শান্ত। এর মধ্যে নয় ইনিংসে ব্যাট হাতে এসেছেন বাইশ গজে। এই ৯ ইনিংসে তার গড় মাত্র ১৬.১১। চট্টগ্রামের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা ৭৩ রান ছিল সর্বোচ্চ। এই হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর সাদা পোশাকের হতশ্রী দশা। এমনকি চলতি বছরে বিদেশের মাটিতেও ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৮২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
এই সকল পরিসংখ্যানে শান্তকে দোষারোপ ততক্ষণ অবধি হয়ত করা যেত না, যদি তিনি লোয়ার অর্ডার ব্যাটার হতেন। টপ অর্ডার ব্যাটার তিনি। ব্যাটিং করেন চার নম্বর পজিশনে। এমন পজিশনে ব্যাটারদের দায়িত্ব থাকে ইনিংস বড় করবার। নামের পাশে রান যুক্ত করবার অঢেল সুযোগও রয়েছে তাদের। কিন্তু বছর জুড়েই ব্যর্থ শান্ত।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে তিনি কোন উদ্যোগ নেবেন কি-না, এমন প্রশ্ন করলেও বরং তীর্যক উত্তর পাওয়া যায় তার কাছ থেকে। এই সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা ঠিক কবে নাগাদ বের হবেন? এই প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরে ঘুরপাক খেলেও, উত্তর সময়ের গহীন অরণ্যে হারিয়ে গেছে।